যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৮ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার ব্রিটেন সময় রাত ১০টায় পূর্ব লন্ডনের নিউহাম হাসপাতালে মারা যান ব্যারিস্টার মনির জামান শেখ। তিনি গ্রাজুয়েট ক্লাব ইউকে-এর সভাপতি ও লন্ডনের পিজিএ সলিসিটরের প্রিন্সিপাল ছিলেন।
মৃত্যুকালে মনির জামানের বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। তিনি এক কন্যা ও স্ত্রী রেখে গেছেন। তার বাড়ি বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার রামপাল থানার কুমলাই গ্রামে। গ্রাজুয়েট ক্লাব ইউকে এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ড. আনিছুর রহমান আনিছ জানান, ব্যারিস্টার মনির জামান শেখ গত দু’দিন পূর্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ব্রিটেনে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে অত্যন্ত পরিচিত মুখ ছিলেন মনির জামান শেখ।
আনিছুর রহমান আনিছ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, কমিউনিটিতে বড় সমস্যা এখন লাশ দাফন প্রক্রিয়া নিয়ে। সম্প্রতি আমার পরিচিত আরেকজন করোনায় মারা যাওয়ার পর দুইজনের দাফন সেবা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। দু’টি প্রতিষ্ঠান জানায়- করোনাভাইরাসে মৃতদের তারা দাফন করেন না। তবে গার্ডেন অব পিস দাফন করে। গার্ডেন অব পিসও খুব ব্যস্ত। প্রতিদিন তাদেরকে অনেক লাশ দাফনের দায়িত্ব নিতে হচ্ছে। এজন্য তাদের শিডিউল পাওয়াও অনেক সময়ের ব্যাপার।
কমিউনিটির অন্যতম পুরাতন মুসলিম ফিউনারেল সার্ভিস তসলিম হাজী ফিউনারেল সার্ভিসও করোনায় মারা যাওয়া রোগী দাফন বন্ধ রেখেছে। তাদের টেলিফোন করলে তারা সরাসরি গার্ডেন অব পিস কবরস্থানের নম্বর দিচ্ছেন এবং সরাসরি সেখানেই যোগাযোগ করতে পরামর্শ দিচ্ছেন।
ব্রিকলেন ফিউনারেল সার্ভিসের অন্যতম কর্নধার পারভেজ কোরাইশী জানান, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে একমাত্র আমরাই করোনা আক্রান্ত রোগীদের দাফন করছিলাম। কিন্তু আমার পার্টনার করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে থাকায় আমিও গত ৬ দিন ধরে আইসোলেশনে আছি।
পারভেজ কোরাইশী জানান, আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, গত সপ্তাহে আমরা করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তির লাশ দাফনের জন্য একটি কবরস্থানে যোগাযোগ করলে তারা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে গার্ডেন অব পিস-এ কবর দিতে হয়েছে। ফিউনারেল সার্ভিসে লাশ রাখার স্বল্পতার জন্য এখন সরাসরি হাসপাতাল থেকে লাশ কবরস্থানে নিয়ে সেখানে গোসল ও জানাজা সম্পন্ন করে লাশ দাফন করতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।