বড়লেখায় চা-বাগানে নৃশংসতা, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে পরিবেশমন্ত্রী


মৌলভীবাজারের বড়লেখায় উপজেলার পাল্লাথল চা বাগানে লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের পর যুবকের আত্মহত্যার ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। শনিবার (০১ ফ্রেব্রুয়ারি) দুপুরে পরিবেশ মন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এসময় তিনি নিহত জলি বুনার্জির মেয়ে চন্দনা বুনার্জিসহ বাগানের চা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সান্তনা দেন। পরে তিনি পাল্লাথল সরকারি চা বাগানের নির্মাণাধীন ভবন এবং চা শ্রমিকদের জন্য নির্মাণাধীন ঘর পরিদর্শন করেন।

এ সময় তাঁর সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম আল ইমরান, বড়লেখা পৌরসভার মেয়র আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী, থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইয়াছিনুল হক, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ তাজ উদ্দিন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা উবায়েদ উল্লাহ খান, নারীশিক্ষা ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ একেএম হেলাল উদ্দিন, উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আহমদ জুবায়ের লিটন, শাহবাজপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (তদন্ত) মো. মোশাররফ হোসেন, পাল্লাথল চা বাগানের সহকারি ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, গত রোববার (১৯ জানুয়ারি) ভোর রাতে উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউপির পাল্লাথল চা বাগানে পারিবারিক কলহের জের ধরে নির্মল কর্মকার নামে এক ব্যক্তি দা দিয়ে কুপিয়ে তার স্ত্রী জলি বুনার্জিকে হত্যা করে। এসময় জলিকে বাঁচাতে গিয়ে নির্মলের দায়ের কোপে নিহত হন জলির মা লক্ষ্মী বুনার্জি। স্ত্রী ও শ্বাশুড়িকে হত্যা করেও ক্ষান্ত হয়নি নির্মল। তাদের বাঁচাতে এসে ঘাতকের দায়ের কোপে নিহত হন প্রতিবেশি বসন্ত বক্তা এবং বসন্তের মেয়ে শিউলী বক্তা। এসময় গুরুতর আহত হন বসন্তের স্ত্রী কানন বালা।

ঘটনার সময় পালিয়ে বেঁচে যায় জলির নয়বছরের শিশুকন্যা চন্দনা বুনার্জি। একে একে সবাইকে হত্যার পর নিজেকেও শেষ করে দেয় নির্মল। প্রথমে নিজেই নিজের মাথায় দা দিয়ে কোপ দেয়। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে পরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। সকালে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতবস্থায় কানন বালাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে এবং নিহতদের লাশ মর্গে পাঠায়।

এই ঘটনায় রোববার রাতেই পাল্লাথল বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন বাদী হয়ে  থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়া কানন বালা (৩৪) নামে আরেক নারী গত ২৭ জানুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।