ভুল-ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন বছর শুরু করতে চান কাদের


এ বছরের ভুল ও ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন বছরে নবতর পথযাত্রার সূচনা করতে চান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক ইস্যুতে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ বছর আমরা যতগুলো কাজ করেছি, সবগুলোই শতভাগ সাফল্য এটা আমি দাবি করব না। কিছু কিছু ব্যর্থতা রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা ছয় মাসই আমি অসুস্থ ছিলাম। আমি অসুস্থ থাকলেও দলের সবাই কাজ করেছেন, তাই আমাদের টিমওয়ার্ক ভালো ছিল। এ বছর আমরা অনেক মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী সংগঠনের কমিটি গঠন করেছি। ঢাকা মহানগরের উত্তর-দক্ষীণসহ সারাদেশে ২৯টি জেলা সম্মেলন করেছি।’

‘আমাদের ঝড়ো দিন গেছে। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও প্রোগ্রাম ছিল। এখন আবার ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত সময় যাচ্ছে। সব মিলিয়ে আমার অসুস্থতার সময় বাদ দিয়ে বাকি সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পার্টির জন্য কাজ করছি।’

তিনি বলেন, ‘এরপরও সবই সাফল্য এমন দাবি আমি করব না। কিছু কিছু ভুল ব্যর্থতাও রয়েছে। এ বছরের ভুল ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য নবতর পথযাত্রা সূচনা করব। নতুন আশার মালা গেঁথে আমাদের সামনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করব। নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করব।’

ভুল বা ব্যর্থতার ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলোকে দেখছেন- জানতে চাইলে ওবায়দুর কাদের বলেন, ‘সব কিছুই পারফেক্ট করতে পেরেছি, এমন দাবি তো আমি করি না। এ বিষয়টাকে ওভাবে ব্যাখ্যা না করে…. এটুকু বলবো, যেগুলো জনগণের কাছে ভুল বা ব্যর্থতা… সেগুলোতে আমরা আগামী বছর ইম্প্রুভ করব।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘গণতন্ত্রকে আরও উন্নত করতে কাজ করব। সুশাসনে আরও এক ধাপ অগ্রগতি হবে। আমাদের মেগা প্রকল্পগুলোর কাজ আরও এগিয়ে যাবে। সুখবর হচ্ছে এ বছরের শেষে পদ্মা সেতুতে ২০তম স্প্যান বসেছে। এখন থেকে প্রতি মাসে তিনটি করে স্প্যান বসবে। মেট্রোরেলের একটা প্রকল্প উদ্বোধন করতে আগামীকাল বছরের প্রথম দিনই আমি উত্তরায় যাচ্ছি। কর্ণফুলী ট্যানেলেরও ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এ কাজগুলোকে আগামী বছর আরও এগিয়ে নেব।’

তিনি বলেন, ‘সড়কে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেখাতে সাফল্য পেতে হবে। পিছিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

নির্দিষ্টভাবে গণতন্ত্রের জন্য কী ধরনের চ্যালেঞ্জ দেখছেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আগামী বছরের প্রথমেই ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচন। আমি আগেও বলেছি, এ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।

নতুন বছরে আইনের শাসনকে প্রতিষ্ঠিত করা হবে, এ ক্ষেত্রে বিরোধী দল একটি বড় পার্ট, সেক্ষেত্রে তাদের জন্য কোনো মেসেজ আছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিরোধী দল সব সুযোগ-সুবিধা পাবে। তারা গণতন্ত্র চর্চা করতে পারবে। সভা সমাবেশ করতে পারবে। স্পিকার তাদের ব্যাপারে যথেষ্ট উদার ও সরকারও নমনীয়। বিরোধী দল শক্তিশালী হলে সরকার ও গণতন্ত্র শক্তিশালী হয়। কাজেই বিরোধী দলের জন্য সভা-সমাবেশে আমরা এখনও কোনো কার্পণ্য করছি না, নতুন বছরেও তারা সে সুবিধা পাবে।

বিরোধী দলকে আস্থা দেয়ার জন্য কোনো উদ্যোগ থাকবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশের বিরোধী দল সরকারের ওপর আস্থা রাখে। একটি দেশে একটি বিরোধী দল, দেখান সেটা প্রতিবেশী ভারত থেকে শুরু করে পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ উন্নত কোনো দেশেই বিরোধী দল সরকারি দলের ওপর আস্থা রাখে না। তাহলে তাদের রাজনীতিটা কোথায় থাকে?

কাউন্সিলরদের মনোনয়নে ক্লিন ইমেজ দেখা হবে, এ বিষয়ে কতটা করতে পেরেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, আমাদের কিছু কিছু ভুল-ত্রুটি ছিল, সেগুলো নিয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ আসছে, সেগুলো আমরা সংশোধন করব।

সড়কে কাজের বিষয়ে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো ক্ষেত্রে সমন্বয় না থাকলে সে ক্ষেত্রে সমন্বয় আনা হবে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *