হঠাৎ বিকট শব্দ, নারী-পুরুষের কান্নার আওয়াজ, আহাজারি। এসব শব্দ শুনে হতবাক ও আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন স্থানীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন সোহরাব হোসেন। ক্ষণিকের মধ্যেই তিনি বুঝতে পারেন, কিছু একটা ঘটেছে। বাইরে বেরিয়ে এসে দেখেন ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা। এ সময় মসজিদের মাইকে এলাকার লোকজনকে ঘর থেকে বের হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। তার আহ্বানে মুহূর্তের মধ্যেই আশেপাশের লোকজন বিশেষ করে যুবকরা ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে। কিছুক্ষণের মধ্যে তিনিও পৌঁছান সেখানে।
সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দভাগ রেলস্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষের পর ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও অন্যান্য উদ্ধারকারী দল আসার আগেই মুয়াজ্জিন সোহরাব হোসেনের আহ্বানে এগিয়ে আসেন এলাকার লোকজন।
উদ্ধার কাজে অংশ নেয়া যুবক মো. রফিকুল ইসলাম এই প্রতিনিধিকে জানান, মুয়াজ্জিন সোহরাব হোসেন মাইকে বারবার দুর্ঘটনার বিষয়টি জানিয়ে এলাকাবাসীকে উদ্ধার কাজে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেকেই ভোররাতে ঘুম থেকে উঠে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এ সময় এলাকাবাসী ট্রেনের ভেতর থেকে শত শত যাত্রীকে বের করে আনে।
তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনার প্রায় আধঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও রেলওয়ের কর্মকর্তা এবং অন্যান্য উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে আসে। এর আগেই জীবন বাজি রেখে ট্রেন থেকে অনেককেই উদ্ধার করে এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে মুয়াজ্জিন সোহরাব হোসেন বলেন, এত বিকট আওয়াজ আমি আমার জীবনে কখনও শুনিনি। প্রথমে আওয়াজ শুনে আমি ভয় পেয়ে যাই। পরে বাইরে বের হয়ে দেখি ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলের কাছেই মসজিদ। তাই সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে গিয়ে মাইকে সবাইকে উদ্ধার কাজে অংশ নেয়ার আহ্বান জানাই।