যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান স্টেটের ডেট্রয়েট সিটিতে চিকিৎসা সুরক্ষা সামগ্রী তৈরির ফ্যাক্টরি নিমার্ণে অর্থায়ন করছে বাংলাদেশের বেক্সিমকো গ্রুপ। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ব্লুমবার্গ নিউজে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্যে জানিয়েছেন বেক্সিমকোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ নাভিল হোসাইন।
প্রতিষ্ঠানটির এ কর্মকর্তা জানান, ফ্যাক্টরিটি নির্মাণের জন্য ডেট্রয়েট সিটিতে স্থান নির্বাচনের কাজ চলছে। ডেট্রয়েট খুবই সুবিধাজনক স্থান। এখানকার সিটি কর্তৃপক্ষসহ সরকারি কর্মকর্তাদের আন্তরিক সাপোর্ট পাচ্ছি। ফ্যাক্টরি নির্মাণে ২ কোটি (২০ মিলিয়ন) ডলার বিনিয়োগ করবে বেক্সিমকো। আগামী নয় মাসের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হবে। প্রাথমিকভাবে এন-৯৫ মাস্ক তৈরি করা হবে। পরবর্তীতে সবধরনের পিপিই তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন বেক্সিমকোর গ্রুপের প্রধান কর্মকর্তা।
জানা গেছে, ইতিমধ্যে শিকাগোভিত্তিক জেস্ট ডিজাইনসের সঙ্গে কৌশলগত চুক্তি করেছে বেক্সিমকো। মিশিগান স্টেট ও ডেট্রয়েট সিটি কর্তৃপক্ষের সহায়তায় যৌথভাবে চিকিৎসা সুরক্ষা পোশাক ফ্যাক্টরি নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করছে দুটি প্রতিষ্ঠান।
ডেট্রয়েট সিটির মেয়র মাইক ডুগান এ উদ্যােগকে স্বাগত জানিয়েছেন। মেয়র বলেন, ডেট্রয়েটবাসী পরিশ্রমী ও নতুন নতুন দক্ষতা শিখতে আগ্রহী। কাজের জন্য এটি উপযুক্ত স্থান।
এ প্রসঙ্গে মিশিগান থেকে প্রকাশিত বাংলা সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক ইকবাল ফেরদৌস এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, মিশিগানের সবচেয়ে বড় সিটি হল ডেট্রয়েট। ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকা হিসেবে খ্যাত। বিশ্বের বেশ কয়েকটি বিখ্যাত মোটর কোম্পানির হেডকোয়ার্টার মিশিগানে। এখানে প্রচুর প্রবাসী বাংলাদেশি সহ বিশ্বের ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বসবাস। অন্যান্য স্টেটের তুলনায় এখানে কোম্পানিগুলোর খরচও কম। এজন্যই হয়তো বেক্সিমকো এখানে সুরক্ষা পোশাক তৈরির জায়গা বেছে নিয়েছে।
উৎপাদনে যেতে প্রায় নয় মাস সময় লাগবে, ততদিনে আসলে করোনাভাইরাস থাকবে কি-না এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রবাসী এ সাংবাদিক জানান,যুক্তরাষ্ট্রের সব সময়ই পিপ্লান থাকে। এখন তারা ধারণা করছে, আরও মানুষ যদি করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয় বা অবস্থার যদি অনেক খারাপের দিকে চলে যায় তাহলে পিপ্লান হিসেবে বেক্সিমকো ছাড়াও বেশ কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধভাবে আমেরিকা পিপিই কীট উৎপাদন করছে।
ডেট্রয়েট সিটির বাসিন্দা প্রবাসী সাংবাদিক আশিকুর রহমান তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, উন্নত এই যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েটে উৎপাদনমুখী বাংলাদেশী কোম্পানি হবে এই খবর সত্যিই বাঙালী কমিউনিটির জন্য আনন্দের ও গর্ব করার মত। বেক্সিমকো গ্রুপকে অভিনন্দন। তবে বিনিয়োগের আড়ালে কোন কোম্পানি যেন অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার না করতে পারে, সেদিকে সরকারকে নজর রাখতে দাবি জানান প্রবাসী এ সাংবাদিক।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ বেক্সিমকোর কাছ থেকে ৬৫ লাখ পিপিই বা সুরক্ষা পোশাক কিনেছে আমেরিকার ফেডারেল ইমারজেন্সির (এফইএমএ) জন্য দেশটির ব্র্যান্ড হ্যানস। গত ২৭ মে এমিরেটসের একটি বিমানে সেই পিপিই গাউনের প্রথম চালান আমেরিকায় এসে পৌঁছায়।