যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ধসের পথে, তিনশ বছরেও এমন মন্দা আসেনি


সারা বিশ্বের চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এই মারণ ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ইউরোপের দেশগুলো। আর বর্তমানে করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হলো যুক্তরাজ্য। দেশটিতে করোনা সবচেয়ে ভয়াল থাবা বসিয়েছে।

করোনার হাত থেকে বাঁচতে যুক্তরাজ্যে চলছে লকডাউন। এমন পরিস্থিতিতে এক ভয়াবহ খবর শুনাল ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। এক পূর্বাভাসে ব্যাংকটি জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। তিনশ বছরের ইতিহাসে এমন মন্দা দেখেননি ব্রিটিশরা।

যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, এই বছর ব্রিটিশ অর্থনীতি সংকুচিত হতে চলেছে। মোটা অর্থনীতির ১৪ শতাংশ কমে যাবে এবার। ১৭০৬ সালের পর এমন অর্থনৈতিক সংকোচন আর দেখা যায়নি ব্রিটিশ অর্থনীতিতে। ব্যাংকটির পুরনো তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন পূর্বাভাস দিয়েছে।

ব্যাংক অব ইংল্যান্ড বলেছে, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে জিডিপি কমেছে তিন শতাংশ। দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রায় ২৫ শতাংশ কমবে। আর বছর শেষে ২০১৯ সালের অর্থনীতির থেকেও ৩০ শতাংশ ছোট হয়ে যাবে এই বছরের অর্থনীতি। বেকারত্ব বাড়বে মোট বেকারের ৯ শতাংশ।

যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মার্চ মাসে সুদের হারকে রেকর্ড পরিমাণ কমিয়ে এনে একটি দু’শ বিলিয়ন পাউন্ডের (২৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) বন্ড ক্রয় কর্মসূচি চালু করেছে। কয়েক সপ্তাহের লকডাউন ব্যবস্থা এবং উত্পাদন কমে যাওয়ার কারণে অর্থনৈতিক শককে মোকাবেলার জন্য চালু করা হয়েছে এই কর্মসূচি।

ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস হুমকির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অর্থনীতিকে সাপোর্ট দেওয়া জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া জানাবে ব্যাংকটি। তবে নতুন কোনো প্রণোদনামূলক পদক্ষেপগ্রহণ বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

দেশটির অর্থনীতি বাঁচাতে আরো কিছু পদক্ষেপ হাতে নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। যুক্তরাজ্যের মুদ্রানীতি কমিটির দু’জন সদস্য প্রণোদনা কর্মসূচিতে আরো শত বিলিয়ন পাউন্ডের (১২৪ বিলিয়ন ডলার) অনুদান দেওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। অর্থনীতিবিদরা পরিস্থিতিকে আরো শক্তিশালী করার জন্য অন্যান্য সদস্যদের একমত হওয়ার প্রত্যাশা করছেন।

যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে আগামী বছর দ্রুত অর্থনীতি আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। কিন্তু সেটা নির্ভর করছে করোনা মহামারি ও লকডাউন বর্ধিত করার ওপর। যদি করোনা ছড়িয়ে পড়তে থাকে আর লকডাউন বাড়তে থাকে; তাহলে আরো ১০০ বিলিয়ন পাউন্ডের প্রণোদনা লাগবে অর্থনীতি বাঁচাতে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *