মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় এক বিরল প্রজাতির ‘মস্তিষ্কখেকো’ অ্যামিবার সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। নাকের মধ্য দিয়ে শরীরে ঢুকে মস্তিষ্ক ধ্বংস করে এই অ্যামিবা। ফ্লোরিডার স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, সম্প্রতি তারা এই অ্যামিবার দ্বারা সংক্রমিত এক ব্যক্তির সন্ধান পেয়েছেন। তিনি ফ্লোরিডার হিলসবোরো কাউন্টি এলাকার বাসিন্দা। এরপর থেকে বিরল যে কোনো সংক্রমণের ক্ষেত্রে ফ্লোরিডা রাজ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, আণুবীক্ষণিক এই জীব মানবমস্তিষ্কে সংক্রমণ ঘটায়। এই অ্যামিবা মস্তিস্কে ঢুকে পড়লে মারাত্মক কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। প্রাথমিক অবস্থায় মাথাব্যথা, ঘাড়ব্যথা, জ্বর ও পেটব্যথার মতো লক্ষণ থাকে হালকা। তবে এর পরিণতি হতে পারে মারাত্মক। এক সপ্তাহের মধ্যে বেশির ভাগ রোগীর মৃত্যু হয়।
এই অ্যামিবা সাধারণত উষ্ণ স্বাদুপানিতে পাওয়া যায়। ফ্লোরিডার স্বাস্থ্য বিভাগ (ডিওএইচ) এই অ্যামিবায় সংক্রমিত রোগীর অবস্থার ব্যাপারে জানায়নি। কোথায় এই সংক্রমণ ঘটেছে, তাও জানায়নি। তবে এই অ্যামিবা একজন থেকে আরকজনে সংক্রমিত হয় না।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলের অঙ্গরাজ্যগুলোয় এই সংক্রমণ দেখা গেছে। তবে ফ্লোরিডায় এটি বিরল। ১৯৬২ সাল থেকে এ পর্যন্ত মাত্র ৩৭ জন এতে সংক্রমিত হয়েছে। গত ৩ জুলাই ডিওএইচ হিলসব্রো কাউন্টির বাসিন্দাদের এই অ্যামিবার সংক্রমণ নিয়ে সতর্ক করে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের পানির কল বা অন্য উৎস থেকে নাকে পানি না ছোঁয়াতে বলেন। জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে আবহাওয়া কিছুটা উষ্ণ থাকায় হ্রদ, নদী, পুকুর ও খালের পানি থেকে অ্যামিবা মানুষের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে।
জ্বর, বমি, নাকে ব্যথার উপসর্গ থাকলে ডিওএইচ দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে মানুষকে আহ্বান জানিয়েছে। কারণ, এই রোগ খুব দ্রুত ছড়ায়।
ডিওএইচ বলছে, মনে রাখবেন, অ্যামিবার বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধব্যবস্থা নিরাপদ গ্রীষ্মকাল নিশ্চিত করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে নেগেলিয়া ফাউলেরির সংক্রমণ বিরল।
২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ৩৪ জনের মধ্যে এই সংক্রমণের তথ্য পাওয়া গেছে।