রাস্তার ধুলাবালির মধ্যে পড়ে থাকা অজ্ঞাত এক নবজাতককে বুকে জড়িয়ে নিলেন ববি খাতুন নামের এক মুদি দোকানি। ছেলেসন্তান না থাকায় তার নামও দেন ‘তাওহীদ’। দ্রুত নিয়ে যান বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে। কিন্তু কম ওজন নিয়ে জন্মানো (ইমম্যাচিউরড) শিশুটির অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানান চিকিৎসকরা।
বর্তমানে শিশুটি শজিমেক হাসপাতালের ইনকিউবেটরে চিকিৎসাধীন।
মঙ্গলবার দুপুরে শহরের তিনমাথা রেলগেট এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করেন স্থানীয় মুদি দোকানি ববি খাতুন। পরে তাকে শজিমেক হাসপাতালে নিয়ে যান।
সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, কম ওজন নিয়ে জন্মানো শিশুটির অবস্থা সংকটাপন্ন। শিশুটিকে ইনকিউবেটরে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
সন্ধ্যায় শিশুটিকে উদ্ধারকারী মুদি দোকানি ববি আক্তার জানান, শহরের তিনমাথা রেলগেট এলাকার তার একটি মুদি দোকান আছে। প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার তিনি তিনমাথা রেলগেট এলাকার বগুড়া-ঢাকা মহাসড়কের পশ্চিম পাশে নিজের দোকানে বসে বেচাকেনা করছিলেন। দুপুরের দিকে মহাসড়কের পূর্ব দিকে রেলওয়ের লেভেল ক্রসিং সংলগ্ন পরিবহন শ্রমিকদের কার্যালয়ের (মহাসড়কে যানজট নিরসনে কাজ করে) মাইক থেকে এক নবজাতক পড়ে থাকার ঘোষণা দেয়া হয়।
ঘোষণাটি শুনে অনেকেই সেখানে ছুটে যান। তিনিও সেখানে যান। কেউ এগিয়ে না আসায় একপর্যায়ে তিনি শ্রমিকদের অনুরোধে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুটিকে বুকে জড়িয়ে নেন এবং শজিমেকে নেয়ার ব্যবস্থা করেন।
ববি খাতুন জানান, তার একটি মেয়ে রয়েছে কিন্তু কোনো ছেলেসন্তান নেই। অজ্ঞাত নবজাতককে তিনি ছেলের মতোই লালন-পালন করতে চান। এমনকি তিনি ওই নবজাতকের নামও রেখেছেন। তার দেয়া ‘তাওহীদ’ নামেই হাসপাতালের নার্সসহ অন্যরা শিশুটিকে ওই নামে ডাকাডাকি করছেন।
বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, হাসপাতালে আনার পরপরই শিশুটিকে ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। ওজন মাত্র ৮০০ গ্রাম। শিশুটি রাস্তায় ধুলাবালিতে পড়েছিল। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত রয়েছে। সব মিলিয়ে তার অবস্থা সংকটাপন্ন। তাই শিশুটিকে ইনকিউবেটরে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।