রোহিঙ্গাদের এনআইডি : সেই সাগর ও সত্যসুন্দর রিমান্ডে


রোহিঙ্গা নারী লাকি আক্তারের কাছে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার ঘটনায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার হন চট্টগ্রাম নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন। সে সময় নিরাপত্তা বাহিনীর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, শুধু জয়নাল নয়, পুরো বিষয়টি ঘটেছে তিনজনের হাত ধরে। অপর দু’জন হলেন, ঢাকা নির্বাচন কমিশনের কর্মচারী সাগর (৩৭) ও সত্যসুন্দর দে (৩৮)।

জালিয়াতির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ায় জড়িত থাকায় অভিযোগে এবার নির্বাচন কমিশনের ওই দুই কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। সোমবার (২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম খায়রুল আমীন তাদের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ‘জয়নালের দেয়া তথ্যে রোহিঙ্গাদের এনআইডি বানাতো সাগর-সত্যসুন্দর’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিআরটিএতে কর্মরত সাগর এক সময় এনআইডি সার্ভারে আপলোড করত। সেই সুবাদে দেশের সব উপজেলার এনআইডি আপলোডের পাসওয়ার্ড তার কাছে ছিল। এছাড়া এনআইডি সার্ভারে অনুপ্রবেশের দায়ে এর আগে নির্বাচন কমিশন থেকে চাকরিচ্যুত করা হয় সত্যসুন্দরকে। এরপরও বিভিন্ন উপজেলায় এনআইডির ডাটা এন্ট্রির কাজ করে চলছিলেন তারা।

জয়নাল, সাগর ও সত্যসুন্দরের এ চক্র রোহিঙ্গাদের জন্য প্রতিটি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বানাতে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা নিত। এ ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের এনআইডির জন্য চট্টগ্রামে থেকে ছবি, আঙুলের ছাপসহ প্রয়োজনীয় সব কিছু সরবরাহ করত ডাবলমুরিং থানা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক মো. জয়নাল আবেদীন।

অপরদিকে নিজের কাছে থাকা উপজেলার এনআইডি আপলোডের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে নির্বাচন কমিশনের সেন্ট্রাল সার্ভারে ডাটা ইনপুট দিত সাগর। একই কায়দায় জয়নালের সরবরাহ করা তথ্যে নির্বাচন কমিশনের সেন্ট্রাল সার্ভারে প্রবেশ করে রোহিঙ্গাদের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি করত সত্যসুন্দরও।

ওই ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসের ডবলমুরিং থানার নির্বাচন কর্মকর্তা পল্লবী চাকমার করা মামলায় সাগর ও সত্য সুন্দরকে আসামি করা হয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *