লেবাননে বদ্ধ রুমে দম বন্ধ হয়ে দুই বাংলাদেশির মৃত্যু


লেবাননে একসঙ্গে মর্মান্তিকভাবে মারা গেছেন বাংলাদেশি প্রবাসী চাচা-ভাতিজা। প্রচণ্ড শীত থেকে বাঁচতে বদ্ধ রুমে লাকড়ি জ্বালিয়ে আগুনের তাপে অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে ঘুমের মধ্যে তাদের মৃত্যু হয় বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে।

নিহতরা হলেন- হবিগঞ্জ সদরের তেঘরিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে রিপন মিয়া (৩২) ও আফসার উদ্দিননের ছেলে মোজাম্মেল হোসেন (২০)।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের পৃথিবীর প্রাচীনতম এলাকা সমৃদ্ধ শুর জেলায় নিজেদের বাসার রুমে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

প্রতিবেশীরা জানান, প্রায় চার বছর আগে বৈধ ভিসায় লেবাননে আসেন রিপন মিয়া এবং এখানে একটি কোম্পানিতে কাজ পান। পরের বছর তার ভাতিজা মোজাম্মেলও লেবানন আসেন। চাচা-ভাতিজা দু’জনেই শুর এলাকায় লায়লা ইব্রাহিম কোম্পানিতে একসঙ্গে কাজ করতেন এবং একসঙ্গেই একটি রুমে থাকতেন।

তিনি জানান, লেবাননে গত ২ সপ্তাহ ধরে প্রচণ্ড শীত পড়েছে। সঙ্গে চলছে তুষারপাত। শুর জেলায় এই সময়ে প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়ে। তাপমাত্রা মাইনাস ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে।

মঙ্গলবার রাতে চাচা-ভাতিজা রাতের খাবার খেয়ে প্রচণ্ড শীতের কারণে রুমের সব দরজা-জানালা বন্ধ করে ভেতরে লাকড়ি দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।

পরদিন অনেক বেলা পর্যন্ত তাদের কক্ষের দরজা বন্ধ পেয়ে প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় হারিছ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।

চিকিৎসক জানিয়েছে, সারারাত রুমে আগুন জ্বালানোর কারণে অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে তাদের মৃত্যু হয়। তাদের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে আছে।

জানা গেছে, লেবাননে এর আগেও শীত মৌসুমে এ ধরনের ঘটনার শিকার হয়ে কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। শীত এলেই বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে প্রবাসীদের সতর্ক করে দেয়া হয়। তারপর অসচেনতার কারণে এমন দুর্ঘটনা হচ্ছে বলে দূতাবাস জানিয়েছে।

বৈরুতে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনায় আমরা মর্মাহত। প্রবাসীরা একটু সচেতন হলেই এ ধরনের মৃত্যু এড়ানো সম্ভব।

প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ শেষে দুই বাংলাদেশির মরদেহ দেশে পরিবারের কাছে দ্রুত পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।