হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর ৭০০তম ওরস শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার (২৩ জুলাই)। মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হয়ে বুধবার ভোরে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দুই দিনব্যাপী এই ওরসের। ওরস উপলক্ষে মাজার এলাকায় নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সোমবার থেকেই মাজারে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে সিলেট মহানগর পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওরসকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লাখো ভক্তরা রোববার থেকেই সিলেটে আসতে শুরু করেছেন। পুলিশের নজরদারি ও কার্যক্রমও শুরু হয়েছে এদিন থেকেই। আর সোমবার থেকে পুলিশ মাজারকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে পুরোদমে। এদিকে ওরস উপলক্ষে নগরীতে যেন যানজট তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করতেও ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে।
মাজার এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুরো মাজার এলাকায় এরই মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে ৬০টি সিসি ক্যামেরা। মাজার কেন্দ্রিক হোটেলগুলোর মনিটরিং করছে সাদা পোশাকের পুলিশ। এছাড়া সিলেট নগরীর প্রবেশমুখ দক্ষিণ সুরমা থেকে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সব পয়েন্টে বসানো হয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট। এদিকে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভক্ত-আশেকানদের জানমালের নিরাপত্তায় মাজার প্রাঙ্গণে সাদা পোশাকের নারী ও পুরুষ পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুসা বলেন, কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, সেদিকে লক্ষ রেখে সিলেট মহানগর পুলিশ ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। সহস্রাধিক পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া মাঠ পর্যায়ের পুলিশের পাশাপাশি মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও তৎপর থাকবেন। এমনকি মাজার কেন্দ্রিক পুলিশি তৎপরতা নজরদারি করবেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। দায়িত্ব পালনে কেউ গাফিলতি করলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওরসে আগতদের নিরাপত্তার জন্য ৬০টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ওরস উপলক্ষে কয়েকটি রাস্তায় মঙ্গলবার ও পরদিন বুধবার যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এসব রাস্তা হচ্ছে আম্বরখানা, চৌহাট্টা, দর্শন দেউড়ি, মীরের ময়দান ঝর্ণারপাড়, আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের পশ্চিম থেকে দর্শন দেউড়ি এবং দর্শন দেউড়ি পেট্রলপাম্প থেকে রাজারগলি মাজার গেট পর্যন্ত। এসব রাস্তা বন্ধ থাকা অবস্থায় বিকল্প সড়ক দিয়ে যানবাহন চালাতে চালকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
মাজার কর্তৃপক্ষ জানায়, রেওয়াজ অনুযায়ী ওরসের দিন সকাল ৯টা থেকে শুরু হবে মাজারে গিলাফ চড়ানো। চলবে বিকাল পর্যন্ত। পরদিন আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে ওরসের আনুষ্ঠানিকতা।
উল্লেখ্য, ইসলাম প্রচারের জন্য হযরত শাহজালাল (রহ.) ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দে ৩৬০ সফরসঙ্গী নিয়ে সিলেট আসেন। ১৩৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৯ জিলকদ তিনি ইন্তেকাল করেন। সিলেটে তিনি যে টিলায় বসবাস করতেন, সেখানেই তাকে দাফন করা হয়। তার কবরকে ঘিরেই পরে গড়ে উঠেছে মাজার।