সব প্রাথমিক বিদ্যালয় হবে ডিজিটাল : গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী


প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেছেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রাথমিক ধারণা দেয়ার জন্য প্রতিটি বিদ্যালয়কে ডিজিটাল করা হবে। এজন্য সেখানে ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া ও সাউন্ডসিস্টেম সরবরাহ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশের সকল বিদ্যালয়ে একটি করে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালু করা হয়েছে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরি ও ব্যবহার অব্যাহত থাকবে। প্রয়োজন অনুযায়ী ৬৭টি প্রাইমারি টিচার ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে (পিটিআই) বিদ্যমান কম্পিউটার ল্যাব আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ করা হবে। শিক্ষার্থীদেরকে তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রাথমিক ধারণা দেয়ার জন্য শিক্ষকদেরকে আইসিটি বিষয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুরে পিটিআই অডিটোরিয়ামে ‘ডিজিটাল সার্ভিস ডিজাইন ল্যাব’ শীর্ষক কর্মশালার প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এ এফ এম মনজুর কাদির। সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে এমডিজি (সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য) বাস্তবায়ন করেছি। বর্তমান সরকার এসডিজি বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে এটুআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এসডিজি (জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে তথ্য ও প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের কোমলমতি শিশুরাই ২০২১ সালে মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশের সারিতে অবতীর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তাই তাদেরকে তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কোমলমতি শিশুদেরকে আইসিটিতে দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করা এবং স্বচ্ছতা আনতে ই-মনিটরিং বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ট্যাব প্রদান করা হয়েছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের যথাসময়ে আগমন এবং প্রস্থান নিশ্চিত করতে বায়োমেট্রিক হাজিরা স্থাপনের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছতা আনতে শিক্ষক/শিক্ষিকার বদলির বিষয়াদি অনলাইনে সম্পন্নের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ভিশন এখন ১৬ কোটি মানুষের ভিশনে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, দেশের শিক্ষাখাতকে ডিজিটাল না করা হলে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য অর্জিত হবে না। তিনি বলেন, প্রযুক্তি জ্ঞানসমৃদ্ধ জাতি গঠনের লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ থেকে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আট হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। এসটাব্লিশিং ডিজিটাল কানেক্টিভিটি (ইডিসি) প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ৬৪ হাজার স্কুলে পর্যায়ক্রমে ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি পৌঁছে দেয়া হবে বলে তিনি জানান।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম-আল হোসেন বলেন, ভূমিষ্ঠ হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে শিশুদের জন্মনিবন্ধন করা হলে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা আরও সহজ হবে। তিনি তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের মাধ্যমে নির্দিষ্ট এ সময়ের মধ্যে শিশুদের জন্মনিবন্ধনের ব্যবস্থা করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে আহ্বান জানান।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *