সমাবর্তন ঘিরে সেজেছে শাবি


আর মাত্র একদিন। তারপরই হবে দীর্ঘ একযুগের প্রতীক্ষার অবসান। আগামী বুধবার (০৮ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় সমাবর্তন।

বহুল আকাঙ্ক্ষিত এই সমাবর্তনকে ঘিরে উৎসাহ-উদ্দীপনার কমতি নেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সমাবর্তনপ্রত্যাশী গ্র্যাজুয়েটদের। রাষ্ট্রপতি ও সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ এবং গ্র্যাজুয়েটদের বরণ করে নিতে বর্ণিল সাজে সাজানো হচ্ছে ক্যাম্পাস। সমাবর্তনকে ঘিরে ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। দিনরাত কাজ চলছে। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ১৭টি উপ-কমিটি নিরন্তর প্রচেষ্টা করছে কমিটির কাজকর্ম সম্পন্ন করতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের মঞ্চ নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বিভিন্ন ভবন ও ক্যাম্পাসের গাছে রঙ করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি সড়ক সংস্কার ও ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবন ও রাস্তার দু’পাশের সারি সারি গাছের ঢালে ঢালে রঙিন আলোতে সাজানো হয়েছে। প্রধান ফটক থেকে বিভিন্ন সড়কের পাশে সমাবর্তন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড, নানা ডিজাইনের গেট ও বিভিন্ন তথ্যসংবলিত নির্দেশিকা টানানো হয়েছে, যা সমাবর্তনের আনন্দকে বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ। ফলে সমাবর্তনকে ঘিরে ক্যাম্পাসের আনাচে কানাচে বইছে উৎসবের আমেজ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এবারের সমাবর্তনে মোট ছয় হাজার ৭৫০ শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেছেন। এদের মধ্যে স্নাতক চার হাজার ৬১৭ জন, স্নাতকোত্তর এক হাজার ১২৭, পিএইচডি দুজন, এমবিবিএস ৮৭৮, এমএস ও এমডি ডিগ্রিধারী ছয়জন এবং নার্সিংয়ের ১২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।

২০০১-০২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকে সর্বোচ্চ ফলাফলধারী ১২ শিক্ষার্থী ও স্নাতকোত্তরে আট শিক্ষার্থীকে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক প্রদান করা হবে। অন্যদিকে অনুষদে প্রথম হওয়া মোট ৮৯ জন শিক্ষার্থীকে ‘ভাইস চ্যান্সেলর’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।

এদিকে সমাবর্তন উপলক্ষে পুরো ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে আরও ৫০টি অতিরিক্ত সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স), পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রসঙ্গে প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দীন আহমদ বলেন, রাষ্ট্রপতি দেশের ভিআইপি ব্যক্তি। তার নিরাপত্তার বিষয়টি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থাগুলো তাদের মতো করে দেখভাল করছে। তারা আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দিচ্ছে সেভাবে পালন করছি।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সমাবর্তনের সার্বিক প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন শেষে পর্যায়ের কাজগুলো চলছে। শিক্ষার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে যেন সুন্দর একটি সমবর্তন উপহার পান- এমনটা প্রত্যাশা করি।

 

বুধবার বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সমাবর্তন অনুষ্ঠান শুরু হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এছাড়া সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।

১৯৯১ সালে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু হওয়ার পর দীর্ঘ ২৮ বছরে মাত্র দুটি সমাবর্তন পেয়েছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ১৯৯৮ সালের ২৯ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন এবং এর ৯ বছর পর ২০০৭ সালের ৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *