হঠাৎ থমকে দাঁড়ালেন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ আতাহার আলী। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রতিদিন প্রাতঃভ্রমণকালে শিখা চিরন্তনের অগ্নিশিখার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ডের ওপর পত পত করে লাল সবুজের পতাকা উড়তে দেখেন।
কিন্তু আজ (২৫ সেপ্টেম্বর) ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ডের ওপর জাতীয় পতাকা উড়তে দেখার বদলে যে দৃশ্য দেখলেন তাতে তার চক্ষু ছানাবড়া!
জাতীয় পতাকার বদলে তিনি স্ট্যান্ডের ওপরে আনুমানিক সাত-আট বছরের একটি ছোট্ট শিশুকে বাদর ঝোলা ঝুলতে দেখেন। ক্ষুদে শিশুটির সামনে দুজন আনসার সদস্য দাঁড়িয়ে বার বার রশি উড়িয়ে মারছিল। কিন্তু শিশুটি ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ডের ওপরে বসে শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করে রশিটি ধরতে পারছিল না।
আনসারদের ধমকে পাইপ বেয়ে নিচে নেমে এসে হাঁপাতে লাগলো সে। এবার কোমড়ে রশি বেঁধে উপরে উঠতে বললো আনসার সদস্যরা। নির্দেশনা অনুযায়ী সে ধীরে ধীরে উপরে উঠে স্ট্যান্ডের মাথায় রশি বাঁধলো। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে নিচে নেমে এলো। এ দৃশ্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সকাল সোয়া ৭টার।
ছোট্ট শিশুকে এমন ঝুঁকি নিয়ে উপরে তুলতে দেখে আতাহার আলী আনসার সদস্যদের রাগতস্বরে ধমকাতে লাগলো। জবাবে আনসার সদস্যরা জানালো, মুরুব্বি, সকালের ঝড়ো হাওয়ায় ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ডের দড়ি ছিঁড়ে পড়ে গেছে। তাই সকালে জাতীয় পতাকা টানাতে পারিনি। ছোট শিশুটি গাছে চড়তে পারে বলে তাকে উপরে উঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, শিশুটির নাম রাকিব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ফুটপাতে মায়ের সঙ্গে থাকে। পার্কেই সারাদিন ঘুরে বেড়ায়।
আনসার সদস্যদের এ কথা মোটেই মেনে নিতে পারেননি প্রাতঃভ্রমণকারী অনেকেই। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটুকু ছেলে উপর থেকে নিচে পড়লেই মৃত্যু কিংবা পঙ্গু হতে পারতো। তারা এ ঘটনায় জড়িত আনসারদের শাস্তি দাবি করেন।