সৌদিতে নির্যাতনের শিকার সেই হোসনা দেশে ফিরেছেন


নির্যাতনের শিকার হয়ে সৌদি আরব থেকে বাঁচার আকুতি জানিয়ে ভিডিও বার্তা পাঠানো সেই হোসনা আক্তার অবশেষে দেশে ফিরেছেন। হোসনাকে বহনকারী সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি-৮০৪ ফ্লাইট বুধবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

এরপর তাকে প্রবাসীকল্যাণ বোর্ডের মাধ্য‌মে হবিগঞ্জ নিয়ে যাওয়া হয় ক‌ঠোর নিরাপত্তায়। এর আগে স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয় ফ্লাইটটি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্র্যাকের অভিবাসন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান।

হোসনা আক্তারের গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার আজমিরিগঞ্জ উপজেলায়। তার বাবার নাম মো. মুজিবুর রহমান। সৌদি আরব থেকে বাঁচার আকুতি জানিয়ে কয়েক দিন আগে ভিডিও বার্তা দেন হোসনা। স্ত্রীকে নিরাপদে দেশে ফেরত আনতে পরে সরকারের কাছে আকুতি জানান তার স্বামী শফিউল্লাহ।

পারিবারিক সূত্র জানায়, দালাল শাহীন মিয়া ও প্রস্তাবিত রিক্রুটিং এজেন্সি আরব ওয়ার্ল্ড ডিস্ট্রিবিউশনের প্রলোভনে পড়ে এজেন্সি আল-সারা ওভারসিস (আরএল-৭৫২) সৌদি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন হোসনা আক্তার। তবে সৌদি যাওয়ার পর থেকে তিনি সেখানে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন।

পরে এক ভিডিও বার্তায় তার ওপর চালানো নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে স্বামী শফিউল্লাহর কাছে বাঁচার আকুতি জানান হোসনা। কোনো উপায় না পেয়ে শফিউল্লাহ ছুটে যান দালাল ও আরব ওয়ার্ল্ড ডিস্ট্রিবিউশন অফিসে। কিন্তু তারা হোসনাকে দেশে আনতে দুই লাখ টাকা দাবি করেন।

উপায় না দেখে গত ২৪ নভেম্বর ব্র্যাকের সহায়তা চেয়ে আবেদন করেন শফিউল্লাহ। এরপর নিরাপদে হোসনাকে দেশে ফেরত আনতে পরিবারটিকে সার্বিক সহায়তার সিদ্ধান্ত নেয় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সৌদি আরবের জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেটের উদ্যোগে গৃহকর্মী হোসনা আক্তারকে উদ্ধারের জন্য নাজরান পুলিশকে অবহিত করা হয়।

জানা গেছে, হোসনা আক্তার সৌদি রিক্রুটিং অফিস রুয়াদ নাজরানের (লাইসেন্স নং- ৩৯১৮৬১৮) মাধ্যমে গত তিন মাস আগে সৌদি আরব যান। তার কর্মস্থল ছিল সৌদি আরবের নাজরান শহরে, যা জেদ্দা থেকে প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার দূরে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে সেফ হাউসে আনা হয়। পরে হোসনাকে দেশে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *