মাছরাঙা আয়োজিত এই দুই দিনের আয়োজনে থাকছে আগর-আতর সমৃদ্ধ অঞ্চল সুজানগর, প্রাকৃতিক জলপ্রপাত মাধবকুণ্ড এবং চা বাগান এলাকা ভ্রমণ। ক্যাম্প আয়োজন সম্পর্কে হাকালুকি ক্যাম্পের প্রধান সমন্বয়ক জহিরুল হাসান জানান, “ঔপনিবেশিক আমলের জলমহাল ইজারা প্রথা এখনো চালু রয়েছে নানা পন্থায়। যার ফলে জলাভূমিগুলো দখল-দূষণের নির্মম শিকারে পরিণত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ হাওর হাকালুকি হাওর । এটি এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি যার আয়তন ১৮,১১৫ হেক্টর। বাংলাদেশে ভরাট হয়ে অনেক জলাভূমি হারিয়ে গেছে। বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে অনেক জলাভূমি। অথচ এই জলাভূমি সারা বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় প্রাকৃতিক সুরক্ষা হিসেবে স্বীকৃত। সারা দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা নদী-নালা-খাল-বিল-হাওর-বাঁওড়-জলাশয়গুলো বাংলাদেশের অমূল্য প্রাকৃতিক সম্পদ।
গরিব মানুষের জীবিকার শেষ আশ্রয়স্থল। জলাভূমিগুলো আবহমান বাংলার লোকাচার ও সংস্কৃতির অংশই নয় শুধু, অর্থনৈতিক বিকাশ, কৃষি, মৎস্য চাষ, যোগাযোগব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশও বটে। জলবায়ু পরিবর্তনের করাল গ্রাস থেকে প্রাকৃতিক রক্ষাকবচ। খাপ খাওয়ানোর প্রাকৃতিক উপায়। আবার জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ যে কার্বন নিঃসরণ, তা কমানোরও এক প্রাকৃতিক পদ্ধতি এগুলো। তাই এ ক্যাম্পিং আয়োজনের মধ্যদিয়ে আমরা হাওর সুরক্ষার বার্তা ছড়িয়ে দিতে চাইছি।”
বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের মতে, জলাভূমি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কার্বন সংরক্ষণ করে। জলাভূমি বিপন্ন হলে বন্যার ঝুঁকিতে পড়ে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের বাড়িঘর ও অবকাঠামো। একই সঙ্গে পানির প্রাপ্যতা ও খরার ঝুঁকি বাড়ে। ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাব লাঘবের সুযোগ কমছে। ভবিষ্যতে এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জলাভূমির গুরুত্ব সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো এবং হাওর পর্যটন জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে মূলত ‘হাকালুকি ক্যাম্প’ আয়োজিত হচ্ছে। ক্যাম্প আয়োজন সম্পর্কে ‘হাকালুকি ক্যাম্প’ আয়োজনের সহ-সমন্বয়ক জামিদুল ইসলাম নাহিদ জানান,” সিলেট তথা পুরো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পদ হচ্ছে হাকালুকি হাওর। নানা প্রতিকূলতায় এখন অনেকটাই সঙ্কটাপন্ন বাংলাদেশের এই বৃহত্তম হাওর তাই এই হাওর রক্ষায় করণীয় এবং হাওরপারের লোক ঐতিহ্য তুলে ধরতে আমাদের এ ক্যাম্পের আয়োজন।
তাছাড়া প্রাকৃতিক সম্পদ আগর-আতর এবং চা শিল্পের অজানা দিকগুলোও আমরা এই আয়োজনের মাধ্যমে দেখাতে এবং জানাতে চাই সবাইকে।” হাকালুকি ক্যাম্পের আয়োজন বিষয়ে সহ-সমন্বয়ক রাজেশ দেবনাথ জানান, “অনুষ্ঠানের প্রথমদিন সন্ধ্যা হতে মধ্যরাত পর্যন্ত থাকছে মনোমুগ্ধকর লোকজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে পরিবেশিত হবে হাওর পারের ধামাইল গীত, বাউল সঙ্গীত এবং রাত্রিযাপন হবে তাঁবুতে। দুই দিনের খাবারের ব্যবস্থাসহ দ্বিতীয় দিন সকালে থাকছে আয়োজনের বিশেষ আর্কষণ সিলেটের ঐতিহ্যবাহী চুঙ্গাপুড়া / চুঙ্গাপিঠা খাবারের ব্যবস্থা। আয়োজনে অংশ নিতে হলে ৬ (ছয়) হাজার টাকা পরিশোধ করে ওয়েবসাইটে নাম নিবন্ধন করতে হবে।
৩ (তিন) বছর বয়সী শিশুর রেজিস্ট্রেশন ফ্রি। ৪ (চার) হতে ১১ বছর বয়সী শিশুর রেজিস্ট্রেশন ফি তিন হাজার টাকা।
রেজিস্ট্রেশনের শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ইং।
রেজিস্ট্রেশন ফি পেমেন্টের বিকাশ নাম্বার 01717533229।
এছাড়া এ আয়োজন সম্পর্কে এই নাম্বারগুলোতে +88 01911734008, +88 01819563840, +88 01717533229 কল দিয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
ওয়েবসাইটে www.hakalukicamp.com আপনার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। আয়োজনের মিডিয়া সহযোগী হিসেবে রয়েছে বাংলা সংবাদ।