হাঙ্গরের পেটে সন্ধান মিললো নিখোঁজ পর্যটকের


ধারণা করা হচ্ছে হাঙ্গরের আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। হাঙ্গরের পেট থেকে পাওয়া আংটিটি দেখে তার স্ত্রী নিশ্চিত করেছেন যে সেটি তার স্বামীর।

৪৪ বছর বয়সী এই ব্যক্তিকে সর্বশেষ মাদাগাস্কারের নিকটবর্তী ফরাসী দ্বীপ রিইউনিয়নে সাঁতার কাটতে দেখা যায়। নিখোঁজ সেই ব্যক্তি সেন্ট গিলসে তার স্ত্রীর সঙ্গে ছুটি কাটাতে এসেছিলেন।

বিবিসি স্কটল্যান্ডকে স্থানীয় বাসিন্দা এরিক কোয়েলকিজেউয়ে’র দেয়া তথ্যমতে, লোকটি মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য তার স্ত্রীকে রেখে সাঁতার কাটতে গিয়েছিলেন।

কোয়েলকিজেউ বলেন, `অঞ্চলটি প্রবালপ্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত। খুব স্বচ্ছ একটি প্যাসেজ আছে যা সমুদ্রের গভীরে যায় তবে বাস্তবে এটি প্রবালপ্রাচীর দ্বারা সত্যিই সুরক্ষিত থাকে।’

তিনি আরো বলেন, `যা ঘটেছিল সেটি দেখে তার স্ত্রী ভীষণ ভয় পেয়েছিল। লোকটিকে খুঁজে বের করার জন্য কয়েকটি হেলিকপ্টার, বিমান, সাঁতারু ও নৌকা সমুদ্রে অনুসন্ধান চালিয়েছে। তবে কয়েকদিন খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি।’

কোয়েলকিজেউ বলেন, `দ্বীপটির পশ্চিম উপকূলে সতর্কতা চিহ্ন ছিল। পূর্বে হাঙ্গরের আক্রমণের কারণে সেখানে সাঁতার কাটার ব্যাপারে মানুষকে সতর্ক করা হয়েছিল। বিমানবন্দরগুলোতেও সতর্কতা ছিল।’

তিনি আরো বলেন, `পূর্বে রিইউনিয়ন দ্বীপে প্রচুর হাঙ্গর আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে তাই এই ব্যাপারে আমরা এখন যথেষ্ট সচেতন। এটি এমন একটি ঘটনা যা আমরা গোপন করিনা। দ্বীপের চারপাশের যেসকল জায়গায় সাঁতার কাটা যাবেনা সেখানে সতর্ক চিহ্ন দেয়া আছে। এমনকি বেশ কয়েকটি নৌকা দ্বীপের পশ্চিম অঞ্চল নজরদারি চালায় যাতে কেউ এই নিয়ম অমান্য না করে।’

গত সোমবার ও মঙ্গলবার ভারত মহাসাগর থেকে সেন্টার ডি সিকুরাইট রিকুইন (সিএসআর) কয়েকটি হাঙ্গর ধরে যার মধ্যে এটি একটি।’

হাঙ্গরটির পেটে তারা একটি হাত খুঁজে পায়। তবে হাতটি হাঙ্গরের পেটে কিভাবে গেল সে ব্যাপারে তারা নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে।

এটিকে লাগুন থেকে মাত্র সাত কিলোমিটার দূরে পাওয়া গিয়েছিল যেখানে লোকটিকে শেষবারের মত দেখা গেছে বলে ধারণা করা হয়। বুধবার সকালে হাঙ্গরটিকে পরীক্ষা করা হয়।

তবে লোকটি সরাসরি হাঙ্গরের আক্রমনে মারা গিয়েছিলো, নাকি সমুদ্রের ঢেউয়ে ডুবে মারা যাওয়ার পর হাঙ্গর তাকে আক্রমন করেছিলো, তা এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।

পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ দফতরের এক মুখপাত্র বলেন, `আমরা ব্রিটিশ এক ব্যক্তির পরিবারকে সহায়তা করছি যিনি লা রিইউনিয়নে সাঁতার কাটার সময় নিখোঁজ হয়েছেন। এছাড়া আমরা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করছি।’

ভারত মহাসাগরে অবস্থিত রিইউনিয়ন দ্বীপে চলতি বছর দু’টি মারাত্মক হাঙ্গর আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।

২০১৩ সালে হাঙ্গরের আক্রমণের পর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ দ্বীপের সকল সৈকত জুড়ে সাঁতার বা অন্যান্য পানিতে হওয়া সব ধরণের খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট এম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ গত মাসে বলেন, ‘২০২২ সালের মধ্যে তিনি পানির সকল খেলা কার্যক্রম পুনরায় চালু করতে চান। তবে তার পূর্বে তিনি চান এটি নিরাপদ কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে।’


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *