অন্যকে ক্ষমা করা অনেক বড় গুণ। হোক আপন কিংবা পর; যে কারো প্রতি কোনো কাজে মনে কষ্ট আসলে দেরি না করে একে অপরকে ক্ষমা করা উচিত। আর হিংসা-বিদ্বেষ কিংবা মনের মলিনতা থেকে মুক্ত থাকতে আল্লাহর কাছে নিয়মিত আশ্রয় চাওয়া জরুরি। আল্লাহ তাআলা যে দোয়াটি কুরআনে তুলে ধরেছেন।
ছোট-খাট কোনো বিষয়ে মনে কষ্ট পেলে তা দীর্ঘ সময় অন্তরে ধরে না রেখে কিংবা বিলম্ব না করে ভুলে যাওয়া। যে কোনো বিদ্বেষ কিংবা হিংসা অন্তরে ধারণ করা একেবারেই অনুচিত।
এ কারণেই হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার প্রিয় খাদেম হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুকে একান্ত আবেগ ও দরদি ভাষায় উপদেশ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে লক্ষ্য করে বলেন-
– হে ছেলে! যদি তোমার পক্ষে সকাল-সন্ধ্যা এভাবে কাটানো সম্ভব হয় যে, তোমার অন্তরে কারও প্রতি কোনো মলিনতা নেই, তবে সেভাবে কাটাবে। তারপর বলেন-
– হে ছেলে! এটা আমার সুন্নাত। আর যে ব্যক্তি আমার সুন্নাতকে জিন্দা করল (বাচিয়ে রাখল) সে আমাকে ভালোবাসলো। আর যে ব্যক্তি আমাকে ভালোবাসলো সে আমার সঙ্গেই জান্নাতে থাকবে।’ (তিরমিজি)
হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী যে কোনো বিষয়ে দিনের যে কোনো সময় ঝগড়া বা মনোমালিন্য হলে দিনের অন্য প্রান্তে এসে কোনো মুমিনের অন্তরে যেন তা বিরাজমান না থাকে।
হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুকে এ হাদিসে একান্ত মমতায় সে উপদেশই দেয়া হয়েছে। তাই মানুষের অন্তর থেকে হিংসা-বিদ্বেষ কিংবা মলিনতা দূর করার এ মহা গুণ অর্জনের আশায় আল্লাহর কাছে কুরআনে ঘোষিত এ দোয়ার মাধ্যমে আবেদন করা যেতে পারে। আর তাহলো-
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَ لِاِخْوَانِنَا الَّذِیْنَ سَبَقُوْنَا بِالْاِیْمَانِ وَ لَا تَجْعَلْ فِیْ قُلُوْبِنَا غِلًّا لِّلَّذِیْنَ اٰمَنُوْا رَبَّنَاۤ اِنَّكَ رَءُوْفٌ رَّحِیْمٌ
উচ্চারণ : ‘রাব্বানাগফিরলানা ওয়া লি-ইখওয়ানিনাল্লাজিনা সাবাকুনা বিল-ইমানি ওয়া লা তাঝআল ফি কুলুবিনা গিল্লাল লিল্লাজিনা আমানু রাব্বানা ইন্নাকা রা-উফুর রাহিম।’
অর্থ : ‘হে আমাদের প্রতিপালক! ক্ষমা কর আমাদেরকে এবং আমাদের সেই ভাইদেরকেও, যারা আমাদের আগে ঈমান এনেছে এবং আমাদের অন্তরে ঈমানদারদের প্রতি কোনও হিংসা-বিদ্বেষ রেখ না। হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি অতি মমতাবান, পরম দয়ালু।’ (সুরা হাশর : আয়াত ১০)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের নসিহত অনুযায়ী কুরআনি দোয়ার মাধ্যমে হিংসা-বিদ্বেষ ও মলিনতা থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন। পরস্পরের সঙ্গে ভালোবাসা ও সহমর্মিতা প্রকাশ করে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ গুরুত্বপূণৃ সুন্নাতকে জিন্দা করার মাধ্যমে তার সঙ্গে জান্নাতে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।