৬৫ হাজার হজযাত্রীকে নিয়ে অনিশ্চয়তায় ধর্ম মন্ত্রণালয়


কয়েক দফা বাড়ানোর পর চলতি বছর হজে যেতে আগ্রহীদের নিবন্ধন কার্যক্রম ৩০ এপ্রিল শেষ হয়েছে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে নানা সমস্যা আর অনিশ্চয়তার মধ্যেও সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রায় ৬৫ হাজার আগ্রহী হজযাত্রী নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। নতুন করে এবার আর কাউকে নিবন্ধনের সুযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

এদিকে নিবন্ধিত প্রায় ৬৫ হাজার হজযাত্রীকেও হজে পাঠানো নিয়ে অনিশ্চয়তার কথা জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ।

বৃহস্পতিবার তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে এ বছর হজ অনুষ্ঠানের ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি সৌদি আরব সরকার। ফলে যারা নিবন্ধন করেছেন তারাও এবার হজে যেতে পারবেন কিনা-তা নিয়ে সন্দেহে আছি।

প্রতিমন্ত্রী জানান, হজযাত্রীদের নিবন্ধনের সময়সীমা ৩০ এপ্রিল শেষ হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে এ মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না। ফলে এবার হজে যাওয়ার নতুন করে কেউ নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন না।

জানা গেছে, ভয়াবহ করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে এবারের পবিত্র হজ অনুষ্ঠান। এখনই হজের পরিকল্পনা চূড়ান্ত না করে পরিস্থিতি স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছে সৌদি আরব। তবে এ পরিস্থিতিতেও হজের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগ্রহীদের নিবন্ধন কার্যক্রম চালায় ধর্ম মন্ত্রণালয়। ২ মার্চ থেকে শুরু হওয়া নিবন্ধন কার্যক্রমের মেয়াদ কয়েক দফা বাড়িয়ে ৩০ এপ্রিল শেষ করা হয়।

সৌদি আরব সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী এ বছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জনের হজে যাওয়ার সুযোগ পাওয়ার কথা। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৭ হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ২০ হাজার জন। কিন্তু করোনা আতঙ্কের কারণে নিবন্ধনে তেমন সাড়া না পড়ায় এবারের পূর্ব নির্ধারিত কোটা পূরণ হয়নি।

নিবন্ধন সার্ভার সূত্র মতে, ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন হাজার ৪৫৭ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬১ হাজার ১৪২ জন নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন।

এবার হজে যেতে আগ্রহীদের জন্য তিন ধরনের প্যাকেজ রেখেছে সরকার। এর মধ্যে প্রথম প্যাকেজে চার লাখ ২৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় প্যাকেজে তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় প্যাকেজে তিন লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ হবে। এ ছাড়া বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করতে আগ্রাহীদের নিবন্ধন করতে বিমান ভাড়া ও সার্ভিস চার্জ বাবদ ১ লাখ ৫১ হাজার ৯৯০ টাকা জমা দিতে হয়।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৩০ জুলাই অর্থাৎ ৯ জিলহজ হজ হবে এবার। সে অনুযায়ী ২৩ জুন হজ ফ্লাইট শুরুর আশা প্রকাশ করেছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়।

এর আগে ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরব বিদেশিদের ওমরাহর অনুমতি দেওয়া এবং পরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। এখন পুরো দেশ রয়েছে লকডাউনে; এ কারণে এখনই হজের পরিকল্পনা চূড়ান্ত না করে পরিস্থিতি স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছে সৌদি আরব।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *