৩০ হাজার বৈশ্বিক মানচিত্র পোড়াল চীন


আন্তজাতিক ডেস্ক :: অরুণাচল প্রদেশকে দীর্ঘদিন ধরেই নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে আসছে চীন। সেখানে বৌদ্ধ ধর্মগুরু দালাই লামার সফর নিয়ে ভারতের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্বের কথাও সবার জানা। এবার এতে নতুন মাত্রা যোগ হল। অরুণাচল প্রদেশ ও তাইওয়ানকে চীনের অন্তর্গত ভূখণ্ড হিসাবে না দেখানোয় চীনা শুল্ক দপ্তরের কর্মকর্তারা সে দেশে ছাপানো ৩০ হাজার বৈশ্বিক মানচিত্র পুড়িয়ে ফেলেছেন।
চীনের সরকার নিয়ন্ত্রিত গ্লোবাল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই মানচিত্রগুলো অন্য একটি দেশে রফতানি হওয়ার কথা ছিল। যদিও সে দেশের নাম প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, কুইংডাওয়ের শুল্ক কর্তৃপক্ষ প্রায় ৩০ হাজার ভুল মানচিত্র নষ্ট করে দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, এগুলোতে তাইওয়ানকে পৃথক দেশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। যা তাদের চোখে ঠিক নয়। তাছাড়া ভারত-চীন সীমান্তেরও ভুল ছবি রয়েছে। অরুণাচলকে দেখানো হয়েছে ভারতের অংশ হিসাবে।
অরুণাচলকে শুধুমাত্র নিজের এলাকা বলে দাবি করেই বেইজিং চুপ থাকে না। সেখানে ভারতীয় নেতা-মন্ত্রীদের সফর হলেই নিয়ম করে তার তীব্র প্রতিবাদও জানানো হয়। চীনের মতে, ভারত অরুণাচলের দাবিদার হলেও সেটি আসলে দক্ষিণ তিব্বতের অংশ।
অন্যদিকে নয়াদিল্লির দাবি, অরুণাচল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ভারতীয় নেতামন্ত্রীরা দেশের অন্য সব রাজ্যের মতোই নিজেদের ভূখণ্ডে ইচ্ছামতো সফর করবেন। অন্য কোনও দেশের তাতে কিছু বলার থাকতে পারে না। ৩৪৮৮ কি.মি দীর্ঘ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা নিয়ে সীমান্ত বিতর্ক নিরসনে ভারত ও চীনের ২১ দফা আলোচনার পরও এ নিয়ে চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
আবার অরুণাচল প্রদেশের মতোই তাইওয়ানকে চীন নিজের ভূখণ্ড হিসাবে দাবি করে। এ ব্যাপারে চীনের বৈদেশিক বিষয় সংক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক আইন বিভাগের অধ্যাপক লিউ ওয়েংজংয়ের বক্তব্য, চীন ওই মানচিত্রের ব্যাপারে যা করেছে, সেটা অবশ্যই আইনসম্মত ও জরুরি ব্যবস্থা।
কারণ, একটি দেশের কাছে সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। তাইওয়ান ও দক্ষিণ তিব্বত, দু’টিই চীনের নিজের ভূখণ্ড। তাকে অন্য দেশের অংশ হিসাবে চিহ্নিত করা অমার্জনীয় অপরাধ। শুল্ক কর্মকর্তারা মানচিত্র নষ্ট করে ঠিকই করেছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *