হয়রানি কমাতে মালয়েশিয়ায় স্থায়ী কনস্যুলেট অফিসের দাবি


মালয়েশিয়ার জহুর প্রদেশে দুই দিন ধরে চলছে দূতাবাসের সেবা ক্যাম্পিং। গতকাল থেকে শুরু হওয়া ক্যাম্পিং শেষ হচ্ছে আজ। শুধু জহুর বারুই নয় দেশটির প্রদেশে প্রদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের ক্যাম্পিং অব্যাহত রয়েছে। আর এ ক্যাম্পেইনে সেবা নিতে ভিড় করছেন প্রবাসীরা। কেউ আসছেন পাসপোর্ট নিতে।

কেউ আসছেন নতুন পাসপোর্টের আবেদন করতে, আবার কেউবা আসছেন মালয়েশিয়া সরকারের ঘোষিত ব্যাক ফর গুড কর্মসূচীর মাধ্যমে কীভাবে দেশে ফিরবেন সে পরামর্শ নিতে। কিন্তু সেবা প্রত্যাশীদের অনেকের অভিযোগ, সময়মতো তারা কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না।

এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ডেপুটি হাই কমিশনার ওয়াহিদা আহমেদ বলেন, দুই বছর ধরে মালয়েশিয়ার প্রত্যেকটি প্রদেশে সরকারি ছুটির দিনেও প্রবাসীদের সেবা দেয়া হচ্ছে। প্রবাসীদের সেবা প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে কেবল জহুর বারুতে নয় মালয়েশিয়ার অন্যান্য দূরবর্তী পেনাং, ক্যামেরুন হাইল্যান্ড, ক্লাং, মালাক্কাতেও সেবা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে।

তিনি বলেন, প্রবাসীদের কষ্ট ও দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে এবং আর্থিক সাশ্রয় হয়েছে। সেবা প্রত্যাশীদের আবেদনে যদি কোনো ক্রুটি না থাকে তাহলে নির্ধারিত সময়ের আগেই সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

ডেপুটি হাই কমিশনার ওয়াহিদা আহমেদের নেতৃত্বে জহুর প্রদেশ ক্যাম্পিংয়ে প্রবাসী কর্মীদের সেবা দিচ্ছেন দূতাবাসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন, দূতাবাসের পাসপোর্ট শাখার কর্মকর্তা মো. আরিফ, উম্মে হানি, মনিরুজ্জামান প্রমুখ।

সময়মতো পাসপোর্ট পাওয়াতে অনেকেই খুশি। দ্রুত পাসপোর্ট প্রদানে হাইকমিশনের সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন মো. রিপন মিয়া জুনায়েদ ইসলামসহ অন্য প্রবাসীরাও।

এদিকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মালয়েশিয়ার সীমান্তবর্তী প্রদেশ জহুর বারুতে দূতাবাসের মোবাইল ক্যাম্পিং পরিদর্শনে গিয়ে সেবা প্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘মালয়েশিয়ার দূর প্রদেশ জহুর বারুতে কর্মরত প্রবাসীদের সেবাদানে অচিরেই স্থায়ী কনস্যুলেট অফিস খোলা হচ্ছে।’

হাইকমিশনারের ঘোষণা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। প্রদেশটিতে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা বলছেন, কুয়ালালামপুর শহর জহুর প্রদেশ থেকে প্রায় ৫শ কিলোমিটার দূরে। কন্স্যুলার সেবা নিতে প্রতিনিয়ত তাদের ঝামেলায় পড়তে হয়।

জহুর প্রদেশের কমিউনিটি নেতা শামীম এজাজ বলেন, মিশনের সেবা নিতে যখন একজন শ্রমিক কুয়ালালামপুরে যায়, রাস্তায় পোহাতে হয় পুলিশি ঝামেলা। অনেকের ভিসা নেই আবার ভিসা আছে। সর্বাবস্থায়ই একজন প্রবাসী পুলিশি হয়রানির কারণে কাঙ্খিত কন্স্যুলার সেবা পাচ্ছে না।

তিনি বলেন, আমাদের হাইকমিশনার ৯ মাস আগে জহুর প্রদেশের মোবাইল ক্যাম্পিং পরিদর্শনে এসে ঘোষণা দিয়েছিলেন, এই প্রদেশে কর্মরত প্রবাসীরা যাতে দ্রুত কন্স্যুলার সেবা পায় সে জন্য স্থায়ী কন্স্যুলার অফিস স্থাপন করা হবে। আমরা যারা জহুর বারুতে বসবাস করি, এখন আমাদের একটাই দাবি দ্রুত স্থায়ী কন্স্যুলার স্থাপনের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম প্রতিবেদককে বলেন, ‘কেবল প্রবাসীদের সার্ভিস প্রদানের জন্য জহুর বারুতে কন্স্যুলেট অফিস খুব শিগগিরই হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক ও দৃঢ় ভূমিকার ফলে কনস্যুলেট অফিস খোলার বিষয়টি দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন হচ্ছে।’

মিশনের যে কোনো সেবা নিতে হলে দায়িত্বরত অফিসারদের সঙ্গে সরাসরি যোগযোগ করতে বলেছেন হাইকমিশনার। এ ছাড়া কোনো মধ্যস্থতাকারী বা দালালের স্মরণাপন্ন না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম বলেন, মালয়েশিয়ায় যারা কর্মরত রয়েছেন তারা সম্মানের জায়গা করে নিয়েছেন। সে সম্মানের জায়গাটুকু ধরে রাখতে হলে যে দেশে কর্মরত রয়েছেন সে দেশের আইনকে সম্মান দেখাতে হবে। সবধরনের অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানান তিনি।