নতুন গান নিয়ে হাজির হলেন কণ্ঠশিল্পী হাবিব ওয়াহিদ। গানটির নাম ‘আবার কোনোদিন’। অমিতা কর্মকারের লেখা গানটির সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন হাবিব নিজেই। গানটি প্রকাশ হয়েছে হাবিব ওয়াহিদের নিজের ইউটিউব চ্যানেল থেকেই। এইচ ডব্লিউ প্রোকাশন হাউসের ব্যানারে গানটির ভিডিও নির্মাণ করেছেন আদিয়া পাল।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে শুধু হাবিবকেই। ঘনো অরণ্য ঘেরা এক জঙ্গলে হেঁটে বেড়াচ্ছেন তিনি। গালভরা দাড়ি। আর চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা। চকলেট কালারের লম্বা কোর্ট পরা হাবিবকে দেখাচ্ছে অন্যরকম। এই গান ও নিজের সংগীত ভাবনা নিয়ে সঙ্গে কথা বলেছেন হাবিব ওয়াহিদ। তুলে ধরা হলো আলাপের চুম্বক অংশ।
কেমন আছেন?
হাবিব ওয়াহিদ : এই তো বেশ ভালো আছি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রকাশিত হয়েছে আপনার গাওয়া নতুন গান। সংক্ষেপে গানটির পেছনের গল্পটা বলবেন?
হাবিব ওয়াহিদ : এটা একটা কথা প্রধান গান। গানটির কথা হাতে পাওয়ার পর সেই কথা অনুযায়ী সুর করেছি। নতুন একজন গীতিকারের লেখা গান। কথাগুলো অনেক সুন্দর। ভালো লিখেছে সে। কথাগুলো পড়েই সুরের এই ফিলটা আসে। অন্যরকম এক অনুভূতি থেকেই গানটির জন্ম।
গানের ভিডিওটির শুটিং হয়েছে কোথায়?
হাবিব ওয়াহিদ : এটা না বলি। শুটিং লোকেশন বলে দিলে সেইটার ছাপ পড়ে যায় গানের ওপর। এটা একটা বন-জঙ্গলের মতো জায়গা। এমন জায়গা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সারা পৃথিবীতেই আছে। আমি চাই গানটি মানুষ শুনুক ও দেখুক। উম্মুক্ত থাকুক তাদের কল্পনার জগত। লোকেশন বলে দিলে গানটি দেখার সময় ওইটাই মাথায় ঘুরতে থাকে।
এই গানটির বিশেষত্ব কী?
হাবিব ওয়াহিদ : এটা ঠিক বিশেষত্ব কি-না সেটা গানের শ্রোতারা বলবেন। এখানে গানের প্রধান চরিত্রটা ফ্যাক্ট। বিশেষ করে ভালোবাসায় অজানা থাকে পরিনতি। অনেকরকম পরিস্থিতি তৈরি হয় চলার পথে। যার কারণে মানুষকে অনেককিছু ত্যাগ করতে হয়। অনেককিছু থেকে দূরে থাকতে হয়। ভালোবাসার অনুভূতিগুলো আসলে নিজের মধ্যেই রাখতে হয়। এমন অনেক মানুষ আছে যারা মনের কতো ভাবনা লুকিয়ে রেখেছেন নিজের মধ্যে।
গানের ভিডিওতে বেশ অন্যরকম দেখাচ্ছে আপনাকে। ভিডিওর মূল ভাবনাটা কী?
হাবিব ওয়াহিদ : ভিডিওটিতে একটা একাকীত্বের ফিল রাখার চেষ্টা করেছি। ধরেন একটা ছেলে সে ডাইরি জুড়ে তার মনের কথা লিখে যাচ্ছে। প্রকৃতির সঙ্গে সে মিশে আছে। কারো উদ্দেশ্যে সে লিখে যাচ্ছে প্রতিদিন। কিন্তু যার উদ্দেশ্যে তার ডাইরি লেখা তার কাছে এগুলো পৌঁছায় না।
কিন্তু সেই চাইলেই তার কাছে মনের কথাগুলো বলে দিতে পারে। কিন্তু সে বলে না। আবার গানটিতে এমন কোনো ইঙ্গিতও নাই যে মেয়েটি ছেলেটিকে ছেড়ে চলে গেছে। ছেলেটার জীবনে এমন কোনো একটা ঘটনা ঘটেছে যার কারণে সে আনমনে লিখতে থাকে। এমনই মানুষের ছায়া তুলে ধরার চেষ্টা করেছি গানে।
গানটি আপনার নিজের ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রকাশ করেছেন। কোম্পানির মুখোমুখি না হয়ে এখন অনেক শিল্পীরাই নিজের চ্যানেল থেকেই গান প্রকাশ করছে, কেন?
হাবিব ওয়াহিদ : ইউটিউব চ্যানেল করা খুব সহজ। একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট খুলেই একটা ইউটিউব চ্যানেল করা যায়। আমার মনে ইচ্ছেটা আগেও ছিল শিল্পীদের, একটা গানের সব স্বত্ব যদি সে নিজের হাতে রাখতে পারে তাহলে মন্দ কী! যদি কোনো কোম্পানি তাকে মোটা অংকের পারিশ্রমিক দিয়ে গান নেন তাহলে অন্যকথা। কিন্তু কোম্পানির কাছে যদি শিল্পী গানের সঠিক মূল্য না পান তাহলে নিজেই নিজের গান ইউটিব চ্যানেল করে প্রকাশ করার অপশন আছে।
আর আগে ক্যাসেট, সিডি ছিল। একজন শিল্পীর পক্ষে হাজার হাজার সিডি বানিয়ে সেটা বিক্রি করা সম্ভব ছিল না। এখন তো কোম্পানিও ইউটিউবেই গান প্রকাশ করছে। নিজে ইউটিউব চ্যানেল করে এখন চাইলেই শিল্পী তার গানের মালিক হতে পারেন। কোম্পানি গান প্রকাশ করলে একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গানটির মালিক হন তারা। নানা চুক্তিরও ব্যপার থাকে।
অনেক সময় কোম্পানির কাজ করলে সেটা তাদের চাহিদা অনুযায়ী করতে হয়। শিল্পীর স্বাধীনতা থাকে না!
হাবিব ওয়াহিদ : সেটা তো থাকবেই। যে ইনভেস্ট করছে সে তার নিজের সার্থটা দেখবেই। তাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। যদি শিল্পী তার নিজস্বতা তুলে ধরতে চাই তাহলে, ইউটিউব তার জন্য ভালো প্ল্যাটফর্ম হতে পারে। কোনো কন্টাকচুয়াল সমস্যাতে তাকে পড়তে হলো না। তবে আমি এটা বলছি না যে কোম্পানি যেটা চায় সেটা খারাপ। তারা তাদের জায়গাই ঠিক, শিল্পীও তার নিজের জায়গায় ঠিক।
নতুন আর কী কাজ নিয়ে ব্যস্ততা?
হাবিব ওয়াহিদ : বেশ কিছু গানের কাজ চলছে। একে একে প্রকাশ হবে সেগুলো।