ফিচার ডেস্ক :: প্রায়ই খবরের শিরোনাম হয়, সেন্টমার্টিনকে নিজেদের দাবী করেছে মিয়ানমার।
কিন্তু এই খবর পড়ে উদ্বেগ হওয়ার বদলে আমরা হাসি! কারণ, আমরা জানি এটা আমাদেরই অংশ। আন্তর্জাতিকভাবেও এটি স্বীকৃত। কিন্তু সেন্টমার্টিন কিভাবে বাংলাদেশের অংশ হলো, সেটা জানেন? দ্বীপটির উৎপত্তি ও ইতিহাস নিয়ে বলেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের দুই অধ্যাপক শেখ বখতিয়ার উদ্দিন এবং অধ্যাপক মোস্তফা কামাল পাশা।
অধ্যাপক বখতিয়ার উদ্দিন নারিকেল জিঞ্জিরা খ্যাত এই দ্বীপটি নিয়ে দীর্ঘ সময় গবেষণা করেছেন। তিনি বলেন, টেকনাফের মূল ভূমির অংশ ছিল জায়গাটি, এটি প্রায় ৫০০ বছর আগের কথা। কিন্তু ধীরে ধীরে এটি সমুদ্রের নিচে চলে যায়। এরপর প্রায় ৪৫০ বছর আগে বর্তমান সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ পাড়া জেগে উঠে। এর ১০০ বছর উত্তর পাড়া এবং পরবর্তী ১০০ বছরের মধ্যে বাকি অংশ জেগে উঠে। তিনি আরো বলেন, প্রায় ৩৩ হাজার বছর আগে সে এলাকায় প্রাণের অস্তিত্ব ছিল। বিভিন্ন কার্বন ডেটিং-এ এর প্রমাণ মিলেছে বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক বখতিয়ার।
অপর গবেষক অধ্যাপক মোস্তফা কামাল পাশা জানান, ২৫০ বছর আগে আরব বণিকদের নজরে আসে এ দ্বীপটি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের সময় আরব বণিকরা এ দ্বীপটিতে বিশ্রাম নিতেন। তখন তারা এ দ্বীপের নামকরণ করেছিল ‘জাজিরা’। পরবর্তীতে যেটি নারিকেল জিঞ্জিরা নামে পরিচিত হয়। ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯০০ সালে ভূমি জরিপের সময় এ দ্বীপটিকে ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া হয়। যদিও সে সময়টিতে বার্মা ব্রিটিশ শাসনের আওতায় ছিল। কিন্তু তারপরেও সেন্টমার্টিন দ্বীপকে বার্মার অন্তর্ভুক্ত না করে ব্রিটিশ-ভারতের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনে ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, খ্রিস্টান সাধু মার্টিনের নাম অনুসারে দ্বীপটির নামকরণ করা হয়। ১৮৯০ সালে কিছু মৎস্যজীবী এ দ্বীপে বসতি স্থাপন করে। এদের মধ্যে কিছু বাঙালি এবং কিছু রাখাইন সম্প্রদায়ের লোক ছিল। ধীরে-ধীরে এটি বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা হয়ে উঠে।
বখতিয়ার উদ্দিন আরো বলেন, দ্বীপটিকে যখন ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তখন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মার্টিনের নাম অনুসারে দ্বীপটির নামকরণ করে।