এক মাসে একই হাসপাতালে ১০০ শিশুর মৃত্যু


ভারতের রাজস্থানের কোটা এলাকার জে কে লোন হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর ঘটনা বেড়েই চলেছে। গত এক মাসে হাসপাতালটিতে প্রায় ১০০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তবে একে স্বাভাবিক মৃত্যু বলেই দাবি করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

জার্মান গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলে এক অনলাইন প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত এক মাসে রাজস্থানের কোটার জে কে লোন হাসপাতালে অন্তত ১০০ নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে বুধবারই (১ জানুয়ারি) মৃত্যু হয়েছে ৯টি শিশুর। তবে কেন এই মৃত্যু? কারও কাছে এর কোনো উত্তর নেই। উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর জেলায় ২০১৭ সালে ঠিক এভাবেই কিছু দিনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছিল অসংখ্য শিশুর। আর এটা নিয়ে সে সময় বিস্তর রাজনীতিও শুরু হয়েছিল।

জে কে লোন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওজন কম থাকায় এভাবে একের পর এক শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ নেই। তবে প্রশ্ন উঠছে, এক মাসে ১০০টি বাচ্চা স্রেফ ওজন কম থাকার কারণে মারা গেল? একুশ শতকে দাঁড়িয়ে এমনটা কীভাবে হয়?

স্থানীয়দের দাবি, ওই হাসপাতালটি বাসের অযোগ্য। হাসপাতালের ভেতর প্রকাশ্যে শুকর ঘুরে বেড়ায়। এক একটি বেডে চার-পাঁচজন করে রোগীকে ভর্তি করে নেয়া হয়। রোগীর তুলনায় নার্সের অনেক কম। ফলে যেসব শিশুকে ওখানে ভর্তি করা হয়, তারা ঠিক মতো চিকিৎসা পায় না। সে কারণেই একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। অথচ এ নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না প্রশাসন।

হাসপাতালটিতে শিশুমৃত্যু নিয়ে যথারীতি রাজনীতিও শুরু হয়ে গেছে। গত বুধবার বিজেপি সাংসদদের একটি প্রতিনিধি দল জে কে লোন হাসপাতাল পরিদর্শনে যা, যার মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়।

ডয়চে ভেলেকে লকেট জানান, হাসপাতালটি বাসের অযোগ্য। শিশুদের চিকিৎসার অধিকাংশ যন্ত্রপাতি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। অথচ কারও কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। আমরা মৃত শিশুদের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেছি। রিপোর্ট তৈরি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দেব।

লকেটের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে কংগ্রেস শাসিত রাজস্থান সরকারের স্বাস্থ্য দফতর।রা জস্থানে এখন কংগ্রেসের সরকার। স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে চাইছে। ঠিক যেভাবে গোরক্ষপুরের ঘটনায় বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল কংগ্রেস।

নাগরিক সমাজের বক্তব্য, একেকটি করে এমন ঘটনা ঘটে, রাজনীতিকরা তার মধ্যেও ভোট খোঁজেন। কাজের কাজ কিছু হয় না। গোরক্ষপুরের হাসপাতাল যে অবস্থায় ছিল, সেই অবস্থাতেই আছে। ঠিক যেমন থেকে যাবে কোটার সরকারি হাসপাতালটি। এক বছর আগে বিজেপি আমলেও যে অবস্থায় ছিল, এখন কংগ্রেস আমলেও হাসপাতালটি সেই একই অবস্থায় পড়ে আছে।

সূত্র : ডয়েচে ভেলে


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *