বিশ্বরেকর্ডধারী পন্ডিত সুদর্শনের অনবদ্য পরিবেশনায় মুগ্ধ সিলেট


বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট নগরীর কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে এক ঐতিহাসিক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় স্বাক্ষী হলেন সিলেটের সংস্কৃতিপ্রেমীরা। গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডবুকে যন্ত্রসংগীতে পরপর চারটি রেকর্ডধারী বাংলাদেশের কৃতি শিল্পী পন্ডিত সুদর্শন দাশের একক পরিবেশনা টানা দুইঘন্টা উপভোগ করেন সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।

পন্ডিত সুদর্শন দাশ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। তিনি ২০১৬ সালে একটানা ৫৯৭ ঘন্টা ১১ মিনিট তবলা বাজিয়ে গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে প্রথম বাঙালি যন্ত্রশিল্পী হিসেবে নাম লেখান। এরপর ২০১৭ সালে ২৭ ঘন্টা ঢোল ম্যারাথন, ২০১৮ সালে ২৪ ঘন্টা ড্রাম রোল ম্যারাথন ও ২০১৯ সালে সর্বশেষ ১৪০ ঘন্টা ৫ মিনিট ড্রামসেট ম্যারাথন বাজিয়ে প্রথম বাঙালি যন্ত্রশিল্পী হিসেবে চারটি বিশ্বরেকর্ড করেন।

সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের আয়োজনে চট্রগ্রাম সমিতি সিলেট ও সিলেট-চট্রগ্রাম ফ্রেন্ডশিপ ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় তাল ও লয়ের ঐশ্বর্য শিরোনামে কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে পন্ডিত সুদর্শন দাশকে বরণ করে নেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। তাকে ফুল ও স্মারক দিয়ে অভ্যর্থনা জানান, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট, চট্রগ্রাম সমিতি সিলেট, চট্রগ্রাম-সিলেট ফ্রেন্ডশিপ ফাউন্ডেশন, সিলেট বৌদ্ধ সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠন।

সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্তের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নগরবাসীর পক্ষ থেকে পন্ডিত সুদর্শন দাসকে ফুলেল শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য প্রফেসর ড. আতফুল হাই শিবলী, সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার ফয়সল মাহমুদ, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ রেনু, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের প্রধান পরিচালক অরিন্দম দত্ত চন্দন, সভাপতি মিশফাক আহমদ চৌধুরী মিশু, চট্রগ্রাম সমিতি সিলেটের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট বিশ^নাথ ঘোষ, সিলেট-চট্্রগ্রাম ফ্রেন্ডশিপ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক মো. শহীদুল ইসলাম।

ব্যতিক্রমী এ আয়োজনে পন্ডিত সুদর্শন দাশের উপর নির্মিত তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এর পরপরই দুইদিনব্যাপী তবলা কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী ২৫ জন শিক্ষার্থী পন্ডিত সুদর্শন দাশের উপস্থিতিতে সমবেতভাবে তবলা পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানের মুল আকর্ষন ছিল গিনেজ রেকর্ডধারী পন্ডিত সুদর্শন দাশের তবলা, ঢোল, ড্রাম রোল ও ড্রাম সেটে একক পরিবেশনা। তার এই অনবদ্য যন্ত্রনৈপুণ্য উপস্থিত দর্শক-শ্রোতা মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করেন।

পন্ডিত সুদর্শন দাশ তার পরিবেশনার একপর্যায়ে তিনি বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন বাংলাদেশ থেকে অনেক প্রতিভাবান শিল্পী আগামীতে বিশ^দরবারে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করবে। হলভর্তি দর্শক অনুষ্ঠানটি মন্ত্রমুগ্ধের মতো উপভোগ করেন।