হজে ভাড়া বাড়াতে চায় বিমান, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের না


আসন্ন হজে বিমানভাড়া কত হবে সে ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। রোববার বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বিমানভাড়া নির্ধারণের ব্যাপারে বিমান, ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি।

হজে বিমানভাড়া বৃদ্ধির ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বেসরকারি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। অপরদিকে কিছুতেই বিমানভাড়া বৃদ্ধি করা যাবে না বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হাব।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, বিমানবহরে নতুন নতুন এয়ারক্রাফট সংযুক্তি, নতুন ইঞ্জিন লাগানোসহ বিভিন্ন কারণে খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় আসন্ন হজে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা ও ঢাকা-মদিনা-ঢাকা কিংবা ঢাকা-মদিনা-জেদ্দা রাউন্ড ট্রিপের জন্য বিমানভাড়া এক লাখ ৫৪ হাজার টাকার প্রস্তাব আনেন বিমান মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

তবে বিমানভাড়া কিছুতেই এত হতে পারে না বলে জোর প্রতিবাদ জানান ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হাব নেতারা। তারা গত বছরের ভাড়া এক লাখ ২৮ হাজার টাকা কিংবা তার চেয়ে কমানোর প্রস্তাব রাখেন। কিন্তু বিমান মন্ত্রণালয় কিছুতেই এক লাখ ৪০ হাজার টাকার নিচে ভাড়া কমানো সম্ভব নয় বলে দৃঢ় অবস্থান নেয়। শেষ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই সভা শেষ হয়।

ধর্ম মন্ত্রণায়েরর একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গত বছর ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আবদু্ল্লাহ অনুরোধ-উপরোধ করে বিমান মন্ত্রণালয়ের এক লাখ ৩৮ হাজার টাকার ভাড়া থেকে ১০ হাজার টাকা কমিয়ে এক লাখ ২৮ হাজার টাকা করেন। আজকের সভায়ও তিনি ভাড়া কমানোর প্রস্তাব করেন। তবে বিমান মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা ভাড়া বৃদ্ধির ব্যাপার দৃঢ় অবস্থান নেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাবের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, বিমান হজযাত্রীদের দিয়ে বাণিজ্য করতে চায়। এ কারণে অতিরিক্ত ভাড়া নির্ধারণ করতে চাইছে। তারা জানান, সৌদি এয়ারলাইন্স ডিসেম্বর মাসে ৪২ হাজার ৪১৬ টাকা ভাড়ায় ওমরাহ যাত্রী পরিবহন করেছে। হজের সময় বিমান যাত্রী নিয়ে সৌদি আরব গেলেও ফেরার সময় খালি আসে এ অজুহাতে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়। বর্তমান হিসাবে দ্বিগুণ ভাড়া ধরা হলে ৮৪ হাজার ৮৩২ টাকা ও তিনগুণ ধরলে এক লাখ ২২ হাজার ৫২৪ টাকা হয়। কিন্তু বিমান এক লাখ ৫৪ ও শেষ পর্যন্ত এক লাখ ৪০ হাজার টাকার কমে যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে না বলে গো ধরে আছে।

হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তছলিম বলেন, ন্যায্য বিমানভাড়া নির্ধারিত হলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু বিমান যে ভাড়া নির্ধারণ করতে চাইছে সে ব্যাপারে আমরা একমত নই। আজকের সভায়ও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে এত ভাড়া দিয়ে তাদের হজ কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব নয়।