গণফোরামের এমপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেছেন, ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা লুটপাট যদি বন্ধ না করা যায় তাহলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব হবে না। শুধু শেখ হাসিনা একা কী করবেন, সবাইকে জনমুখী, মানবপ্রেমী হতে হবে। যে লক্ষ্যে ২০ লাখ শহীদ বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তাদের আত্মা যাতে শান্তি পায় মুজিববর্ষে এটাই হওয়া উচিত আমাদের আদর্শ।
রোববার রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবে আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, জাতীয় পার্টির এমপি রওশন আরা মান্নান, এমপি সুলতানা নাদিরা, খন্দকার মমতা হেনা লাভলী, তাহমিনা বেগম, সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দীন প্রমুখ।
মুজিববর্ষে দুর্নীতি মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধুর আত্মাকে শান্তি দেয়ার আহ্বান জানান সুলতান মনসুর। তিনি বলেন, মুজিব কোট পরলেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করা যায় না। অথচ আজ প্রায় অনেককেই দেখি সে কোট পরতে।
তিনি বলেন, ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস- ২০০৮ সালে যদি রাজনৈতিক পরিস্থিতির শিকার না হতাম তাহলে এবার ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করতে তো না, নৌকা নিয়েই নির্বাচন করতাম। পরিস্থিতির শিকার হয়েই এটা করতে হয়েছে।
২০০৮ সাল থেকে রাজনৈতিক কারণে কারাগারে তিনি বন্দি ছিলেন মন্তব্য করে বলেন, তা না হলে তিনিও নৌকা মার্কা নিয়ে বিজয়ী হতে পারতেন। এবারের নির্বাচনে তিনি বহু প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে বিজয়ী হয়েছেন বলে মন্তব্য করেন।
সুলতান মনসুর বলেন, একদিন যারা বঙ্গবন্ধুকে হিটলার বলেছে, যারা তাকে ভারতে চলে যেতে বলেছে, যারা জিয়ার ১৪ দফা বাস্তবায়নে কাজ করেছে, আজ তারা জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলে, তারা আজ এ সংসদে নৌকা মার্কা নিয়ে বিজয়ী হয়ে সংসদে রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি ১৯৮৯ সালে বঙ্গবন্ধুর ছবি ডাকসু কার্যালয়ে টাঙাই। এ ছবি টাঙানোয় দুজন আমাকে গুলি করতে গিয়েছিল। কিন্তু তবুও ছবি নামাইনি।’
তিনি বলেন, এদেশের রাজনীতিতে ডাকসুর ভিপি হিসেবে যে নীতি নিয়ে চলেছিলাম আজও তাতেই আছি। এখন আমি জনসভায় জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলি। যতদিন বেঁচে থাকব বঙ্গবন্ধু আদর্শ বুকে ধারণ করেই কাজ করে যাব।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, রাজধানীর পরিবেশ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হচ্ছে। নগরীর চারপাশের ইটভাটাগুলো যদি পরিবেশ আইন মেনে চলতে বাধ্য করা না যায় বা কন্ট্রোল না করা যায় তাহলে পরিবেশ কিছুটা বিনষ্ট হবে। তাছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মশার প্রজনন হয়, যা বিভিন্ন মশাবাহিত রোগের কারণ। সে কারণে সারা বছর সিটি করপোরেশনকে তিনি মশানিধনের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, দেশে স্বাস্থ্যখাতে প্রভূত উন্নয়ন ঘটেছে। যেখানে আগে দেশে মাত্র আটটি মেডিকেল কলেজ ছিল তা কয়েকগুণ বেড়ে হয়েছে মোট ১১১টি। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে কয়েক হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছে। গ্রামে গ্রামে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে গেছে কয়েক হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তার বক্তব্যে বলেন, দেশের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ রেকর্ড পরিমাণে উৎপাদন হচ্ছে। দেশে আর লোডশেডিং খোঁজ মেলে না।
তিনি বিএনপি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, তাদের আমলে মাত্র তিন হাজার দুশ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। শেখ হাসিনা সরকারের এ দুই মেয়াদে তা বেড়ে হয়েছে ১৬ হাজার মেগাওয়াট। ২০২১ সালে আমরা ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড করার পরিকল্পনা নিয়েছি। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ এগিয়ে চলেছে, মাতারবাড়ীর কাজ প্রায় শেষের দিকে।