কানাডার সাবেক দুই মন্ত্রীকে বহিষ্কার


আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: দুর্নীতির অভিযোগে কানাডার সাবেক দুই মন্ত্রীকে দল থেকে বহিষ্কার করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। নির্মাণ সংস্থা এসএনসি লাভালিন কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়

বহিষ্কারাদেশে ট্রুডো বলেন, ‘সাবেক আইনমন্ত্রী জোডি উইলসন-রেবো এবং ট্রেজারি বোর্ডের সাবেক প্রধান ফিলপট দলীয় আইন প্রণেতা হিসেবে তাদের দায়িত্ব পালনের যোগ্যতা হারিয়েছেন। তারা দলের ভাবমূর্তি পুরোপুরি ক্ষুণ্ণ করেছেন। যে কারণে আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য দেশের জাতীয় নির্বাচনে দল থেকে তাদেরকে আর প্রার্থী হিসেবে আর মনোনয়ন দেয়া হবে না।’- খবর দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট

সম্প্রতি কানাডার জনপ্রিয় নির্মাণ সংস্থা এসএনসি লাভালিন সংক্রান্ত নতুন নথি জনসম্মুখে আসার পরই এ বিষয়ে নড়েচড়ে বসেন প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো। যদিও এসব নথি প্রকাশে এনেছেন তারই সরকারের সাবেক আইনমন্ত্রী জোডি উইলসন রেবোল্ড।

নথিতে রেবোল্ড অভিযোগ করে বলেন, ‘দুর্নীতির তদন্ত থেকে সংস্থাটিকে রক্ষা করতে চাপ দেওয়া হয়েছিল।’ যদিও নিজের এই দাবি প্রমাণের জন্য এ সংক্রান্ত একটি ফোন কলের রেকর্ডিং ও অন্যান্য নথি হাউস অব কমন্সে সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে উত্থাপন করেছেন ট্রুডোর সাবেক এই আইনমন্ত্রী।

তাছাড়া সেই নথিতে কানাডীয় প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে, এর মধ্যে লিবিয়াতে প্রকল্প পেতে দেশটির ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মার গাদ্দাফির ছেলে সাদি গাদ্দাফিকে তারা বিপুল অর্থ প্রদান করেছে। যদিও বিদেশিদের ঘুষ দিয়ে প্রকল্পের কাজ পাওয়ার এমন চেষ্টা কানাডীয় আইনে এক বড় ধরনের অপরাধ।

দীর্ঘ সাত বছর যাবত কানাডা পুলিশ এসএনসি-লাভালিনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত করছে। এতে এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হয়নি। যে কারণে চলতি মাসের শুরুর দিকে কমন্সের জাস্টিস কমিটি এ সংক্রান্ত শুনানির সমাপ্তি ঘোষণা করে। যদিও জোডি উইলসন-রেবোল্ড ইতোমধ্যে আবারও শুনানির দাবি জানিয়ে নতুন নথি উত্থাপন করেছেন।

কানাডার হাউস অব কমন্সের সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে জমা দেওয়া ফোন কলের রেকর্ডিংয়ে রয়েছে ট্রুডো সরকারের সাবেক আইনমন্ত্রী জোডি উইলসন-রেবোল্ড এবং প্রিভি কাউন্সিলের কর্মকর্তা মাইকেল ওয়ের নিকের কথোপকথন।

১৮ মিনিটের সেই রেকর্ডিংয়ে তারা এসএনসি লাভালিনকে অভিযুক্ত করার বিষয়টি আলোচনা করছিলেন। তাদের সে আলোচনায় উঠে এসেছে, প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো চান না যে, এসএনসি লাভালিনকে সরাসরি অভিযুক্ত করা হোক। তার ইচ্ছে একটি সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টি সমাপ্ত করা হোক।

এমন অভিযোগের বিষয়ে সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রুডো বলেছিলেন, ‘কুইবেক অঞ্চলের কর্মসংস্থানের স্বার্থে কেউ যদি কোনো ভূমিকা পালন করেন তাহলে আমি ভুল কিছু করিনি। ফলে এ জন্য আমি ক্ষমা চাইব না। এসএনসি লাভালিন সেই অঞ্চলে অনেক বড় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। এতে কুইবেকের প্রায় আট হাজারের বেশি বাসিন্দা এসএনসি-লাভালিনে কাজ করেন।’


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *