বড়লেখায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের ভূমি উদ্ধার


মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার কাঠালতলী বাজার এলাকায় সড়ক ও জনপথের (সওজ) ভূমি দখলমুক্ত করতে অভিযান চালানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এ অভিযান চলে।

এ সময় অর্ধশত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা করা হয়েছে। এই উচ্ছেদের ফলে সড়ক ও জনপথের (সওজ) প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের ২০০ শতক ভূমি অবৈধ দখল মুক্ত হয়েছে।

এছাড়া দোকান ও ভবনের সামনে সরকারি জায়গার উপর মালামাল রাখার অভিযোগে ফয়ছল আহমদ নামের এক ব্যক্তিকে ৩ হাজার টাকা, হাজী মুদরিছ আলী এন্ড সন্সকে ১০ হাজার টাকা, স্বাদ এন্ড প্রীতি ট্রেডার্সকে ১০ হাজার টাকা, আহমদ এন্ড মাহবুব ভেরাইটিজ ষ্টোরকে ১০ হাজার টাকাসহ মোট  ৪ প্রতিষ্ঠানকে ৩৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই অভিযান চলাকালে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় আব্দুল করিম নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১ মাসের সাজা দেওয়া হয়েছে।

বড়লেখা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। এতে সহযোগিতা করেছে বড়লেখা থানা পুলিশ, বিজিবি ও দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শামীম আল ইমরান।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অনেক বছর ধরে লোকজন কাঠালতলী এলাকায় বড়লেখা-মৌলভীবাজার আঞ্চলিক সড়কের দুই পাশে সড়ক ও জনপথের (সওজ) জায়গা দখল করে অবৈধভাবে ব্যবসা করছে। এই এলাকায় সরকারিভাবে বাজারের জন্য একটি নির্ধারিত স্থান রয়েছে। কিন্তু সেখানে না গিয়ে সকলেই সড়কের জায়গা দখল করে ব্যবসা করছিলেন। অনেকে দোকানের সামনে সড়কের জায়গার ওপর মালামাল রাখেন। বিভিন্ন গাছের সাথে বিলবোর্ড ও ব্যানার সেঁটে রাখছে। এ এলাকা দিয়ে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র মাধবকুণ্ড লোকজন বিভিন্ন স্থান থেকে যাওয়া-আসা করেন। সড়কের জায়গা দখল করে ব্যবসা করায় প্রায়ই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছিল। পথচারীর চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। গত কয়েকদিন আগে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। এতে অনেকে স্থাপনা সরিয়ে নিয়েছেন। বাজারও চলে যায় নির্ধারিত স্থানে। তবে বেশ কিছু স্থাপনা সরানো হয়নি। এগুলো সরানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। তারপরও সরানো হয়নি।

এ অবস্থায় মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে অভিযান চালানো হয়। এ সময় অর্ধশত অবৈধ স্থাপন উচ্ছেদ করা হয়। ফলে সড়ক ও জনপথের (সওজ) প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের ২০০ শতক ভূমি অবৈধ দখল মুক্ত হয়। অভিযানের সময় নির্দেশনা না মেনে অবৈধভাবে মালামাল রাখার অভিযোগে ফয়ছল আহমদ নামের এক ব্যক্তিকে ৩ হাজার টাকা, হাজী মুদরিছ আলী এন্ড সন্সকে ১০ হাজার টাকা, স্বাদ এন্ড প্রীতি ট্রেডার্সকে ১০ হাজার টাকা, আহমদ এন্ড মাহবুব ভেরাইটিজ ষ্টোরকে ১০ হাজার টাকাসহ মোট  ৪ প্রতিষ্ঠানকে ৩৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই অভিযান চলাকালে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় আব্দুল করিম নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১ মাসের সাজা দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এ অভিযান চলে।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শামীম আল ইমরান। এ সময় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. উবায়েদ উল্লাহ খান, থানার এসআই মো. রশিদ উদ্দিন প্রমুখ সাথে ছিলেন।

বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শামীম আল ইমরান বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই অভিযান চালানো হয়েছে। এতে সহযোগিতা করেছে পুলিশ, বিজিবি ও ইউনিয়ন পরিষদ। অবৈধ দখলদারদের আগে নোটিশ দেওয়া হয়। মৌখিকভাবেও জানানো হয়। পাশের বাজারে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দেই।

আজকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে গিয়ে দেখা গেছে, বেশ কিছু স্থাপনা রয়ে গেছে। সরকারি জায়গা থেকে অর্ধশত স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এসময় অবৈধভাবে সড়কের জায়গা দখল করে রাখায় ৪ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করায় হয় ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে বাধা দেওয়ার অপরাধে একজনকে এক মাসের বিনাশ্রম জেল দেওয়া হয়।’