এক বিদ্যালয়ে একবারই ভর্তি ফি, হচ্ছে নীতিমালা


বেসরকারি বিদ্যালয়ে উন্নীত ক্লাসে পুনঃভর্তি ফি আদায় বন্ধ করতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে একই বিদ্যালয়ে পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত কাউকে আর ভর্তির নামে বাড়তি ফি দিতে হবে না। এ নীতিমালার ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিউশন ফির নামে গলাকাটা অর্থ আদায়ও বন্ধ হয়ে যাবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে গলাকাটা ফি আদায় করা হয়। একেক প্রতিষ্ঠানে একেক ধরনের ফি আদায় করে যা পরিশোধে অভিভাবকদের নাভিশ্বাস ওঠে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো বিধান না থাকায় সরকারিভাবে বারবার সতর্ক কারার পরও তা বন্ধ হচ্ছে না। সেজন্য এ ধরনের ফি নিয়ন্ত্রণে ওই নীতিমালা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে।

জানা গেছে, নীতিমালা প্রণয়নে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) মোমিনুর রশিদ আমিনকে প্রধান করে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম-সচিব (অডিট ও আইন) আহমদ শামীম আল রাজী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ গোলাম ফারুক, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের পরিচালক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আনোয়ারুল হক।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) টিউশন নীতিমালা সংক্রান্ত সভা হওয়ার কথাও ছিল। পরে তা পিছিয়ে আগামী রোববার (২ জানুয়ারি) নির্ধারণ করা হয়েছে।

কমিটির প্রধান মোমিনুর রশিদ আমিন মঙ্গলবার বলেন, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীসহ অনেক জেলার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গলাগাটা টিউশন ফি আদায় করা হচ্ছে। তার সঙ্গে একই প্রতিষ্ঠানে একজন শিক্ষার্থী পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত হলে মোটা অংকের অর্থও আদায় হয়ে থাকে।

তিনি বলেন, এসব বিষয়ে শৃঙ্খলা ফেরাতে টিউশন ফি নীতিমালা তৈরি হচ্ছে। নীতিমালার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সব ফি নির্ধারণ করে দেয়া হবে। এর অতিরিক্ত আদায় করা হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ-সংক্রান্ত কাজের বেশ অগ্রগতি হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির এক সদস্য জানান, সব মহানগর এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি ও টিউশন ফি সহনীয় পর্যায়ে আনা হবে। কেউ ইচ্ছামতো বা লুকানো অর্থ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করতে পারবে না। যৌক্তিক কারণ ছাড়া প্রতি বছর তা বাড়াতে পারবে না।

তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত একটি খসড়া নীতিমলা তৈরি হচ্ছে। আগামী রোববার কমিটির সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে আলোচনার মাধ্যমে খসড়া নীতিমালাটি চূড়ান্ত হতে পারে।

কমিটির ওই সদস্য আরও বলেন, শুধু বাংলা মাধ্যম ও বাংলা মিডিয়ামে নয়, এর সঙ্গে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল-কলেজে বেতন-টিউশন ফি নির্ধারণ করে দেয়া হবে। বর্তমানে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোর টিউশন ফি, কারিকুলাম, বেতনসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। একটি অভিন্ন নীতিমালার মাধ্যমে বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তি-টিউশন ফি ও অন্যান্য ব্যয় সহনীয় পর্যায়ে আনা হবে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *