জোরে একটু বাতাস হলেই ঘুটঘুটে অন্ধকার মৌলভীবাজার


রিপন দে ::  দেশের ৬৩ জেলায় বিদ্যুতের গ্রিড উপকেন্দ্র থাকলেও মৌলভীবাজারে সেটা নেই। ফলে ৩০-৪০ কিলোমিটার দূর থেকে আসা বিদ্যুতের লাইন একটু জোরে বাতাসেই বিকল হয়ে অন্ধকারে ডুবে যায় জেলা সদর। বর্ষা এলেই দুর্ভোগে পড়েন এই অঞ্চলের ২৬ হাজার গ্রাহক।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজারে বিদ্যুতের গ্রিড উপকেন্দ্র না থাকায় এখানে বিদ্যুৎ আসে শ্রীমঙ্গল ও ফেঞ্চুগঞ্জ গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে। দুটি লাইনই গ্রাম, পাহাড় ও হাওর-বাওড়ের মধ্য দিয়ে এসেছে। এতে ঝড়বৃষ্টি হলেই লাইনের ওপর গাছপালা পড়ে এবং বজ্রপাতে ইনসুলেটর ফেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। গত দুই দিনে জেলা সদর ৬ ঘণ্টা করে বিদ্যুতবিহীন ছিল। কারণ আগাম বৈশাখী ঝড়ে অন্য উপকেন্দ্র থেকে আসা বিদ্যুতের লাইন ছিঁড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে।

প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলেই এই চিত্র নিয়মিত দেখা যায়। বারবার আবেদন জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলা সদরের বাসিন্দারা।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) মৌলভীবাজার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজার জেলা সদরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল এবং মৌলভীবাজার-ফেঞ্চুগঞ্জ ৩৩ কেভি (কিলোভোল্ট) গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে। জেলা সদর থেকে শ্রীমঙ্গলের দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার এবং ফেঞ্চুগঞ্জের দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে জেলা সদরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এই লাইন নষ্ট হলে এর বিকল্প হচ্ছে মৌলভীবাজার-ফেঞ্চুগঞ্জ লাইন। মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল লাইনে সমস্যা হলে জেলা সদরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রাখতে এ ব্যবস্থা।

পিডিবি মৌলভীবাজার কার্যালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, ঝড় ও বজ্রপাতের কারণে মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল এবং মৌলভীবাজার-ফেঞ্চুগঞ্জ গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। কারণ ওই দুই উপকেন্দ্রের সরবরাহ লাইনের বিভিন্ন স্থানে ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ে। বজ্রপাতে বিদ্যুৎ লাইনের ইনসুলেটর ফেটে যায়। গাছপালা কেটে পরিষ্কার করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত ইনসুলেটরের স্থান চিহ্নিত করতে অনেক সময় লেগে যায়। প্রায় পুরো লাইন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়। এর মধ্যে বৃষ্টি থাকলে লাইন মেরামত করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে দেরি হয়ে যায়। তবে এ সমস্যা থাকবে না যদি মৌলভীবাজার শহরে গ্রিড সাবস্টেশন স্থাপন করা হয়। একটি সরবরাহ লাইনের সমস্যার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হবে না।

পিডিবি মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম আহমদ জানান, ৩০/৩৫ কিলোমিটার দূর থেকে বিদ্যুতের লাইন এসেছে। ঝড় তুফানে গাছপালা পড়ে লাইন বিকল হয়, গ্রিড সাবস্টেশন না হওয়া পর্যন্ত এই সমস্যা যাবে না।