বিএনপিকে বর্তমান অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে এবং অপকর্ম ছেড়ে সুপথে ফেরার আহ্বান জানিয়ে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, ‘আপনারা যত অপরাধ করেছেন তার জন্য জনগণের কাছে করজোড়ে ক্ষমা চান। প্রতিজ্ঞা করুন আর কোনোদিন এসব অপকর্ম করবেন না।’
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাষ্ট্রপতির ভাষণ সম্পর্কিত আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘জামাত-শিবির, রাজাকার, আলবদরদের অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করেন। যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকার করুন। বলিষ্ঠ কণ্ঠে উচ্চারণ করুন, জয়বাংলা ধ্বনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করুন। এসবের পর বাঙালি জাতি হিসেব করে দেখবে, আপনাদেরকে ক্ষমা করা যায় কী যায় না।’ তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানিত ভাতা ২০ হাজার টাকা করার দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার রাজনীতি কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে? আজকে তা প্রমাণিত হয়েছে। মানুষ হত্যা করে সন্ত্রাস করে বাড়ি গাড়ি পুড়িয়ে নারী ধর্ষণ করে যারা ক্ষমতায় আসতে চায় বা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়, তারা কখনো পারে না। এর পরিণতি ভয়াবহ, যার প্রমাণ বারবার হয়েছে, ইতিহাসের শিক্ষা এইটা। সেটা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেনি। তাই বিএনপিকে একটা ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) দিতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির একজন সদস্য (হারুনুর রশীদ) এইখানে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ সরকার নাকি জাতিকে বিভক্ত করেছে। বিভক্ত করেছে কারা? যারা রাজাকার, আলবদরদের নিয়ে রাজনীতি করেন তাদের জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি একটা আর আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি তাদের ঐক্যের ভিত্তি একটা।’
সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ তার বক্তব্যে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর অঙ্গুলি হেলনে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী কেঁপে উঠেছিল। তিনি পাক শাসকদের ওপর শাসন চালিয়েছিলেন। কিন্তু ৭৫ পরবর্তী ৯৬ সাল পর্যন্ত জিয়া-এরশাদ জোর করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জাতির সঙ্গে মিথ্যাচার করেছে, জনগণের সম্পদ লুট করেছে। অপশাসন চালিয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত করেছে। তারা মানুষের কল্যাণ করতে সক্ষম হয়নি। তাদের পরিণতিও দেখেছে দেশের মানুষ।’
সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীর অতীত জীবন (বঙ্গবন্ধুর সময়) যেমন মহৎ ছিল তাতে কোনো সন্দেহ নেই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেও বর্তমানে বাংলাদেশ দারিদ্রমুক্ত-ক্ষুধামুক্ত একটি দেশ। তার নেতৃত্বে দেশ এখন অগ্রযাত্রার শিখরে।’
ওয়ার্কার্স পার্টির সংসদ সদস্য মোস্তফা লুৎফুল্লাহ সরকারের উন্নয়নের প্রশংসা করলেও ব্যাংকের অর্থ লুটপাট, আত্মসাতের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘এক শ্রেণির লুটেরা শীর্ষ কর্মকর্তা, তাদের যোগসাজশে কিছু কর্মকর্তাও ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থ ঋণ নেয়ার নামে বিদেশে পাচার করছে। কানাডায় তারা দ্বিতীয় হোম বানিয়ে লুটের টাকা নিয়ে দেশবিরোধী স্লোগান দিচ্ছে।’
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর জোরদার পদক্ষেপের আহ্বান জানান তিনি। রোহিঙ্গারা যেন দুধকলা দিয়ে কালসাপ পোষার মতো না হয় সেজন্য তিনি এ সমস্যা দ্রুত সমাধানে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানান।
এছাড়াও রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য কে এম রহমতুল্লাহ, বেগম শবনম জাহান, সাইমুন সরওয়ার কমল, মো. আক্তারুজ্জামান প্রমুখ।