সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোড (পাউবো) এর আওতাধীন হাওরে ১৫৯টি পিআইসি রয়েছে । এই পিআইসির মাধ্যমে ১৫৯টি প্রকল্পের মধ্য ৭২ টি প্রকল্পে বাঁেধর কাজ এখনো শুরু হয়নি । নীতিমালা অনুযায়ী গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর থেকে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করে তা চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে। এছাড়া এখানকার ৯৩টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সদস্যদের এখনো পানি উন্নয়ন বোর্ডের তরফ থেকে বরাদ্দের প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হয়নি। এখনকার ৭২টি প্রকল্পে কাজ শুরু না হওয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ পিছিয়ে পড়েছে।
কৃষকদের মধ্যে দিন দিন বাড়ছে ফসলডুবির আশঙ্কা। এ নিয়ে পিআইসি সদস্যসহ স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চন্দ্র সোনার থাল, সোনামড়ল, ধানকুনিয়া, জয়ধনা, কাইলানী, ঘোড়াডোবা, গুরমা ও গুরমার বর্ধিতাংশ এই আটটি হাওর সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে রয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী গত বছরের ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করে তা চলতি বছরের ২৮ ফেব্রæয়ারীর মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে। হাওর থেকে দেরিতে পানি নামাসহ নানা অজুহাত দেখিয়ে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শুরু করা হয় ১৭ ডিসেম্বর।
এ উপজেলার আটটি হাওরে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সংখ্যা ১৫৯টি। বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৩০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে চন্দ্রসোনার থাল হাওরে ৫১টি, গুরমা ৩০টি, গুরমার বর্ধিতাংশ হাওরে তিনটি, ঘোড়াডোবা ১১টি, কাইলানী ১৭টি, ধানকুনিয়া সাতটি, জয়ধনা ১০টি, সোনামড়ল হাওরে ৩০টি প্রকল্প রয়েছে। এরমধ্যে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত চন্দ্রসোনার থাল হাওরে ৪০টি, কাইলানী হাওরে ১২টি, গুরমার হাওরে ১০টি ও সোনামড়ল হাওরে ১০টি প্রকল্পে এখনো কাজ শুরুই হয়নি।
বরাদ্দের প্রথম কিস্তি বাবদ দুই কোটি ৮১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ছাড় দেওয়া হলে তা স্থানীয় সোনালী ব্যাংকে এসে জমা হয়। এই টাকা থেকে গত ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত এখানকার ১৫৯টি পিআইসির মধ্যে ৬৬টি পিআইসিকে বরাদ্দের প্রথম কিস্তির চেক বিতরণ করা হয়েছে। টাকার অভাবে বাকি থাকা ৯৩টি পিআইসিকে এখনো প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় পিআইসিদের প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ অনেকটাই পিছিয়ে পড়ছে।
এ ব্যাপারে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের ধর্মপাশা উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আলা উদ্দিন দৈনিক অধিকারকে জানান, এ উপজেলার আটটি হাওরের ১৫৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজের মধ্যে ৭২টি প্রকল্পে এখনো কাজ শুরু না হওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত হতাশাজনক। দ্রæত ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করা উচিত।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী ও ধর্মপাশা উপজেলা কাবিটার প্রকল্প বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব মাহমুদুল ইসলাম দৈনিক অধিকারকে জানান, এবার হাওর থেকে দেরিতে পানি নামার কারণে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ কাজ শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে অবশিষ্ট পিআইসিরদের মধ্যে দ্রæত বরাদ্দের প্রথম কিস্তির চেক তুলে দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে ধর্মপাশা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু তালেব দৈনিক অধিকারকে জানান, রোববার থেকে বরাদ্দের প্রথম কিস্তির চেক পাননি এমন সব পিআইসিদের হাতে চেক তুলে দেওয়া হবে। আগামী ২৮ ফেব্রæয়ারীর মধ্যে এ উপজেলার হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করার জন্য আমাদের সবরকম চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।