কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় জমি দখলে নিতে শিক্ষক ও এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ এক পরিবারের পাঁচজনকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।
স্থানীয় এক ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে তাদের কুপিয়ে আহত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল মজিদ। রোববার সকালে পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের বাইন্যা ঘোনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন মগনামা ইউনিয়নের বাইন্যা ঘোনা গ্রামের মরহুম একরাম মিয়ার ছেলে ও পূর্ব মগনামা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল মজিদ (৬০), তার ভাই রশিদ আহামদ (৫৫) ও কামাল হোসেন (৫০), আবদুল মজিদের ছেলে ও পেকুয়া মডেল সরকারি জিএমসি ইনস্টিটিউশনের এসএসসি পরীক্ষার্থী আশরাফুল মেহরাব মুহিব ও ভাগিনা আরিফুল ইসলাম (২০)।
আহতের মধ্যে মাস্টার আবদুল মজিদ ও কামাল হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত অন্যদের পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানায়, ২০০৩ সালে মাস্টার আবদুল মজিদ ও তার দুই ভাই মিলে বাইন্যাঘোনা এলাকায় সড়কের পাশে ৪০ শতক জমি কেনেন। সে সময় থেকে জমিটি তাদের ভোগদখলে রয়েছে।
রোববার মাস্টার আবদুল মজিদ বাজার পাড়া কবরস্থানে তার মায়ের কবর জিয়ারত শেষে বাড়ি ফেরার পথে দেখতে পান ওই জমিতে মগনামা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মনছুর আলমের নেতৃত্বে একদল বহিরাগত টংঘর স্থাপন করছে। এ দৃশ্য দেখে শিক্ষক আবদুল মজিদ তার জমিতে টংঘর নির্মাণে বাধা দিতে গেলে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় মনছুর আলম।
খবর পেয়ে আহত আবদুল মজিদকে উদ্ধার করতে তার ভাই কামাল, রশিদ, ছেলে মুহিব ও ভাগিনা আরিফ সেখানে যান। এ সময় তাদেরকেও একইভাবে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় মনছুর আলমের নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা।
আহতদের পরিরাবের সদস্য শহিদুল ইসলাম বলেন, মনছুর আলমের নেতৃত্বে মো. কালু, পাখি আক্তার, কবির হোসেন, আলী হোসেন ও রুবি আক্তারসহ একদল বহিরাগত সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালায়। ঘটনার পর স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে বাবা ও চাচাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান জানান, মজিদ ও কামালের মাথায় ধারালো কিরিচের আঘাত রয়েছে। গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেকে পাঠানো হয়েছে।
মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মনছুর নামের এক লোক বহিরাগত সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনে শিক্ষক পরিবারের জমি জবর দখলে নিতে হামলা চালিয়েছে। এ সময় পাঁচজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়।
পেকুয়া থানা পুলিশের ওসি কামরুল আজম বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।