ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে কলেজছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ


নগরী থেকে এক কলেজছাত্রীকে (১৭) তুলে নিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক বনি আমিনের বিরুদ্ধে। গত রোববার নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকা থেকে ওই কলেজছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে।

সেখান থেকে তুলে নিয়ে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে একটি আবাসিক হোটেলে রাতভর ওই ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণ করেন বনি আমিন। পরে সোমবার রাতে ঝালকাঠি জেলা শহরের ওই কলেজছাত্রীর এক আত্মীয়র বাড়িতে তাকে পৌঁছে দিয়ে পালিয়ে যান বনি আমিন। আটকের ভয়ে সোমবার রাত থেকে ছাত্রলীগ নেতা বনি আমিন আত্মগোপনে রয়েছেন।

এদিকে রোববার রাতে ওই কলেজছাত্রীর মা নগরীর বিমান বন্দর থানায় এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে তার মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে।

অভিযুক্ত বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক বনি আমিন নগরীর কাশিপুর গণপাড়া এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে। ছাত্রলীগের রাজনীতির পাশাপাশি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির (ইস্যু ক্লার্ক) কর্মচারী বনি আমিন। বিয়ে করেছেন অনেক আগে। তার দু’টি সন্তান রয়েছে।

অপহৃত ওই কলেজছাত্রীর বাড়ি বরিশালের উজিরপুর উপজেলায়। বাড়ি থেকে যাওয়া-আসা করে বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজে পড়াশোনা করছেন।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা বনি আমিনের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, বনি আমিনের ভাতিজি বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী। অপহৃত কিশোরীও একই কলেজের ছাত্রী। বনি আমিনের ভাতিজি ওই কলেজছাত্রীর বান্ধবী। সেই সুবাদে তার সঙ্গে পরিচয় ছিল বনি আমিনের।

ওই কলেজছাত্রী বনি আমিনকে চাচা বলে সম্বোধন করতেন। গত রোববার ওই কলেজছাত্রী কলেজ থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। নথুল্লাবাদ এলাকায় আসলে একটি গাড়িতে জোরপূর্বক তুলে নেয় বনি আমিন। এরপর তাকে কুয়াকাটায় নিয়ে যাওয়া হয়। সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন একটি আবাসিক হোটেলে রাতভর ওই ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণ করেন বনি।

এদিকে এ ঘটনায় রোববার রাতে থানায় কলেজছাত্রীর মা অপহরণের অভিযোগ দেন। পুলিশ কলেজছাত্রীর সন্ধানে বিভিন্ন তৎপরতা শুরু করে। বিষয়টি টের পেয়ে সোমবার রাতে কলেজছাত্রীকে ঝালকাঠি জেলা শহরের তার এক আত্মীয়র বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে পালিয়ে যান বনি আমিন।

বিমানবন্দর থানা পুলিশের ওসি জাহিদ বিন আলম অভিযোগের বরাত দিয়ে জানান, ঘটনার দিন গত রোববার বনি আমিন নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকায় অবস্থান নেন। কলেজছাত্রী ওই পথে যাওয়া আসা করে- বনি আমিনের জানা ছিল। এরপর কলেজ ছাত্রীর মুঠোফোনে কল করে কোথায় তার অবস্থান জানতে চান।

তিনি জানান, কিছুক্ষণ পরে কলেজছাত্রী সেখানে পৌঁছালে বনি আমিন তাকে একটি মাইক্রোতে ওঠার প্রস্তাব দেন। কিন্তু এতে সে রাজি না হলে একপর্যায়ে জোরপূর্বক তোলা হয় এবং মাইক্রোটি দ্রুত চালিয়ে নথুল্লাবাদ এলাকা ত্যাগ করে।

ওসি জাহিদ বিন আলম জানান, রোববার রাতে কালেজছাত্রীর মায়ের অভিযোগ পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হয়। সোমবার রাতে ঝালকাঠি জেলা শহরের ওই কলেজছাত্রীর এক আত্মীয়র বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। তবে অভিযুক্ত বনি আমিন আত্মগোপনে থাকায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। আটকের চেষ্টা চলছে।

ওসি জাহিদ বিন আলম জানান, ধর্ষণ সংক্রান্ত পরীক্ষার জন্য ওই কলেজ ছাত্রীকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। রিপোর্ট পেলে কলেজছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে কি-না তা নিশ্চিতভাবে বলা যাবে।

বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সংগঠনের পক্ষ থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সত্যতা পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।