খোলা মাঠে এসএসসি পরীক্ষা দিল ৭৮ শিক্ষার্থী


বাঁশের খুঁটিতে কাপড় দিয়ে মোড়ানো প্যান্ডেল। উপরে বিভিন্ন রঙের চাদর। দূর থেকে দেখলে বিয়ে বাড়ির প্যান্ডেল কিংবা কোনো অনুষ্ঠানের মঞ্চ মনে হবে।

দৃশ্যত অনুষ্ঠানস্থল মনে হলেও কার্যত এটি পরীক্ষার হল। শুধু সাধারণ পরীক্ষার হল নয়, এবারের চলমান এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার হল এটি। রোদের মধ্যে এ প্যান্ডেলের ভেতরে বসে গণিতের পরীক্ষা দিয়েছে ৭৮ জন শিক্ষার্থী।

সিলেটের বালাগঞ্জ সরকারি ডিএন উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে এমন ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে প্যান্ডেল বেঁধে পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে।

তবে সিলেট শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলছেন, পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিন ক্যাটাগরির কোনো কর্মকর্তাকেই বিষয়টি জানানো হয়নি।

জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার এসএসসির গণিত বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বিষয়ে অনিয়মিত পরীক্ষার্থী বেশি থাকায় বালাগঞ্জের সরকারি ডিএন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে মাঠের মধ্যে কাপড় দিয়ে প্যান্ডেল বেঁধে পরীক্ষার আয়োজন করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। ওই দিন ৭৮ জন অনিয়মিত পরীক্ষার্থী রোদের মধ্যে বসে পরীক্ষা দেয়। এতে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে তাদের।

এ ব্যাপারে সরকারি ডিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রে এবার ৯৬৭ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা গ্রহণের আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রতিদিন ৫০০ জন পরীক্ষা দিচ্ছে। কিন্তু গণিত বিষয়ে অনিয়মিত পরীক্ষার্থী বেশি থাকায় মাঠের মধ্যে প্যান্ডেল বেঁধে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। ৯৬৭ জনের ধারণক্ষমতা না থাকা সত্ত্বেও কেন বাইরে বসে পরীক্ষা দিতে হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কিছু বলতে পারেননি।

তিনি বলেন, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে। তার সম্মতিতে খোলা মাঠে পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাংশু কুমার সিংহের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও কল রিসিভ করেননি তিনি।

সিলেট শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কবির আহমদ বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ট্যাগ অফিসার ও কেন্দ্র সচিব; এই তিন পর্যায়ের কর্মকর্তা রয়েছেন। তারা কেউ আমাকে বিষয়টি জানাননি।

তিনি বলেন, ধারণক্ষমতার বেশি পরীক্ষার্থী কোনো কেন্দ্রে থাকার কথা না। কোনো কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী বেশি হলে আমরা উপকেন্দ্র ব্যবহার করি। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠান কেন এমন করল তা আমার জানা নেই। উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে এ ব্যাপারে তাদের আলাপ হয়েছে কি-না তা খোঁজ নিয়ে দেখব।