জ্বর-সর্দি নিয়ে যানবাহনে ওঠা যাবে না : স্বাস্থ্যমন্ত্রী


করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সর্দি, কাশি ও জ্বর নিয়ে যানবাহনে ওঠা কিংবা ভ্রমণ করা যাবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ ও দিক-নির্দেশনা প্রদানে রোববার (১৫ মার্চ) সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান মন্ত্রী।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় একটি সভা হয়েছে। এখানে ১৮টি মন্ত্রণালয়ের সচিব ও তাদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন, বিস্তর আলোচনা হয়েছে।’

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দু’জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগের যে তিনজন রোগীর ছিল, সবাই সুস্থ হয়ে চলে গেছেন। কাজেই এখন বলতে পারি না যে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস নেই। আছে, এবং ছড়িয়ে যাতে না যায় সেদিকে আমরা বেশি সতর্কতা অবলম্বন করছি।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘কারও যদি শরীরে জ্বর থাকে, তারা যেন কোনো যানবাহন ব্যবহার না করেন। সর্দি, জ্বর, ও কাশি সেরে যাওয়ার পর তারা ভ্রমণ করবে এবং যানবাহন ব্যবহার করবে। এই বিষয়টি বেশি করে বলেছি। প্রত্যেক মন্ত্রণালয়কে বলেছি, তারা যাতে তাদের মতো করে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয় এবং প্রচার-প্রচারণা চালায়। আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে আমরা চিঠি পাঠাব।’

তিনি বলেন, ‘সভায় শিল্প, শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে এসেছিল। আমরা তাদেরকে বলেছি, ওখানে যে শ্রমিক কাজ করেন তাদেরকে তারা কীভাবে ম্যানেজ করতে পারেন বা কী করছে? তাদেরকে কি কিছু পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তাদেরও তাপমাত্রা পরীক্ষা করে কাজে যোগদান করা এবং আত্মীয় স্বজনের মধ্যে যদি কেউ বিদেশ থেকে আসে এবং সে বিষয়ে অবহিত করা।’

বাসে, রেলে এবং লঞ্চে চলাচলের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য বলা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যাত্রীরা যাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে এবং যাত্রীরা চলে যাওয়ার পরে বাস, রেল ও লঞ্চ যাতে পরিষ্কার করে। এ সব বিষয়ে রেল ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিকে বলা হয়েছে, যাদের আত্মীয়-স্বজন বিদেশে রয়েছে তারা যাতে খুব জরুরি না হলে এই মুহূর্তে দেশে না আসেন। কারণ তারাই তো করোনাভাইরাস দেশে নিয়ে আসল।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘বস্তিবাসী যারা রয়েছেন তাদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় যেমন সমাজকল্যাণ ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। তাদেরকে বলা হয়েছে, একটা সতর্কতামূলক অবস্থান নেয়ার জন্য।’

তিনি বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয়কে বলেছি, আমাদের দেশে এই মুহূর্তে যাতে ওয়াজ মাহফিল বা অন্যান্য ধর্মের যে ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়, এগুলো থেকে যাতে বিরত থাকে। তাতে হয়তো সংক্রামণটা আরও কমবে এবং কমার সম্ভাবনা থাকবে। এ বিষয়গুলো মসজিদের মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা করার জন্য বলেছি। আমরা যদিও বলছি যে, সীমিত আকারে মসজিদে আসার জন্য।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা ইতিমধ্যে জানেন যে, ওমরাহ ভিসা বন্ধ হয়ে গেছে। মক্কায় (কাবাঘরে) তাওয়াফও খুবই সীমিত হয়ে গেছে। কাজেই আমাদের এখানে মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা কম আসলে ভালো হয় এবং যারা বিদেশ থেকে এসেছে তারা যেন মসজিদে না আসে এবং তাদের আত্মীয়-স্বজনরা যাতে না আসে। এই বিষয়ে আমরা পরামর্শ দিয়েছি।’

করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ঢাকা শহরে কয়েকটি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও জানান জাহিদ মালেক।

এ সময় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, চিকিৎসা শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূরসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *