করোনাভাইরাসের বিস্তার রুখে দিতে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে চলেছেন চিকিৎসক, নার্স, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংবাদকর্মীরা। আক্রান্ত রোগীর ধরাছোঁয়ার মধ্যে থেকেও তাদেরকে নিরলসভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। সংক্রমণরোধে পর্যাপ্ত পোশাক-পরিচ্ছদ, ব্যবহার্য সামগ্রী কিছুই নেই তাদের। মনে নানা শঙ্কা এবং দায়িত্ববোধের কারণে পিছিয়ে যেতে চাচ্ছেন না।
শঙ্কিত পরিবার পরিজন কর্তব্য কাজে বাধা দিচ্ছেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ চাকরি ছেড়ে দেওয়ার জন্যও চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে-কিন্তু দায়িত্ববোধ, সেবাব্রত আর মানবিকতাবোধ তাদেরকে কর্মস্থলে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁঁকিতে নিশ্চিত মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেই ডাক্তার, নার্স, সাংবাদিক, র্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। ঝুঁকি জেনেও দায়িত্ব থেকে পিছপা হননি ফায়ার সার্ভিসকর্মী, অ্যাম্বুলেন্স চালক, লাশ সৎকারকারী লোকজন, আয়া, ওয়ার্ডবয়, পরিচ্ছন্ন কর্মীরা। কর্মস্থলে পর্যাপ্ত মাস্ক, গ্লাভস, অ্যাপ্রন, জীবাণুনাশক নেই, করোনা ঝুঁকি থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখার নিশ্চিত কোনো ব্যবস্থাও গড়ে তোলা যায়নি। অনেক ক্ষেত্রে করোনা রোগীর আত্মীয়স্বজনরা পর্যন্ত পালিয়ে যাচ্ছে, করোনায় মৃত ব্যক্তির লাশটাও গ্রহণ করছে না কেউ।
কিন্তু সেখানেও এসব পেশার মানুষ সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও মানবিকতা নিয়ে স্বজনদের মতোই দায়িত্ব পালন করে চলছে। হাসপাতালগুলোয় ডাক্তার-নার্সদের সবার কাছে এখনো পিপিই সুবিধা পৌঁছেনি, তারা সাধারণ অ্যাপ্রন, মাস্ক, গ্লাভস ব্যবহার করেই আক্রান্ত ও সন্দেহভাজন রোগীদের সেবা দিয়ে চলছেন। ভয়ঙ্কর ছোঁয়াচে ভাইরাস জেনে বুঝেও আক্রান্ত রোগীর গা ঘেঁষেই চলছে তাদের দায়িত্ব পালন। করোনায় আক্রান্ত রোগী আসার খবর শুনে চিকিৎসাধীন অন্য গুরুতর রোগীরাও যখন হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যান, তখনো মাস্টাররোলে চাকরি পাওয়া আয়া পারুল, সাজেদা, মিনা আক্তারদের হাসপাতাল ত্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়। পরিচ্ছন্ন কর্মীরাও চরম ঝুঁকি নিয়েই করোনা রোগীর বিছানাপত্র, পরিচ্ছদ, ব্যবহার্য সামগ্রীর সবকিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব পালনে বাধ্য হন।