করোনার দিনলিপি: —– মিশিগানে ভার্চুয়াল আড্ডায় বাংলাদেশীরা


প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে স্টে হোম আর লকডাউনের কবলে গোটা যুক্তরাষ্ট্র। বন্ধ অফিস -আদালত, ব্যবসাবানিজ্য ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাসিন্দারা ঘর থেকে বের হন না। লকডাউনের কারণে অনেক অফিস কাজকর্ম চলছে ঘরে বসে অনলাইনে।

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ টি স্টেটের মধ্যে ৩২ টি স্টেটের সাড়ে চব্বিশ কোটি মানুষ এখন গৃহবন্দী। এরমধ্যে দ্বিতীয় বাংলাদেশী অধ্যুষিত মিশিগান স্টেটে প্রায় ষাট হাজার প্রবাসী বাংলাদেশীও রয়েছেন ঘরবন্দী জীবনে। অদৃশ্য করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে ২৪ ঘন্টা বদ্ধ ঘরে বন্দী তারা। ব্যস্ত জীবন হঠাৎ গৃহবন্দী।

এই পরিবেশে কর্মহীন বেশির ভাগ মানুষের সময় কাটছে ভার্চুয়াল আড্ডায়। অনেকে নিরবে-নিভৃতে নামাজ-এবাদত-বন্দেগি করছেন। কেউ কেউ ইন্টারনেট স্যোশাল সাইটে সময় ব্যয় করছেন। কেউবা বই পড়ে, গান শুনে, টিভি দেখে। আর গৃহিণীরা মুখরোচক রান্নাবান্নার কাজে ব্যস্ত থাকছেন।

করোনার দিনলিপি কেমন কাটছে জানতে চাইলে বাংলাদেশ অ্যাসোশিয়েশন অব মিশিগান (বাম) সভাপতি জাবেদ চৌধুরী জানান, ভিডিও কলে বন্ধুবান্ধব সহ দেশের বাড়ির আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বলে এবং কমিউনিটির অসুবিধায় থাকা লোকজনের খোঁজখবর নিয়ে সহযোগিতার কাজে বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছি।

হবিগঞ্জ জেলা সমিতির তুহিন চৌধুরী জানান, দীর্ঘ সময় ধরে ঘরে থাকাটা একঘেয়েমি লাগে। তাই ঘরে বসে বার্চুয়াল আড্ডায় সঙ্গ দেই পুরনো দিনের বন্ধুদের সাথে। পাশাপাশি নামাজ কালাম করেও সময় কাটাই।

চিকিৎসক মোহাম্মদ হোসেইন জানালেন, লকডাউনে ব্যস্ততা কমেনি, বেড়ে গেছে। ভোরবেলা ঘুম ভাঙে পেসেন্টের ফোনে। সামাজিক দূরত্ব মেনে, ঘরে বসে ভিডিও কলে (টেলি মেডিসিন) সেবা দেই। এভাবে দিনের বেশির ভাগ সময় চলে যাচ্ছে। বাকি সময়টুকু ফ্যামেলির সঙ্গে কাটাই।

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার তামিম আহমেদ জানান, লকডাউনের কারণে ঘরে বসে অনলাইনে অফিস করতে হয়। টানা সময় ধরে ঘরে বসে কাজ করাটা অসহ্য লাগে। গান শুনে, টিভি দেখে ও ইন্টারনেটের স্যোশাল সাইটে ভিডিও কল ও চ্যাটে বাকি সময়টুকু কাটাই।

সাংবাদিক আশিকুর রহমান জানান, সংবাদ লিখে, বই পড়ে আর টিভি দেখে সময় পার করি।

মোহাম্মদ আলী নামে আরেক জন জানান, দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে আমেরিকায় বাস করছি কিন্তু এই রকম পরিস্থিতির মুখোমুখি কখনও হইনি। নামাজ-বন্দেগির পাশাপাশি টিভি দেখে খবরের কাগজ পড়ে দিন কাটছে।

শিউলি আক্তার জানান, এখন অন্য কোন কাজ নেই। ছেলের সঙ্গে দাবা খেলা ও নামাজ-কালাম পড়ার পাশাপাশি স্পেশালি মুখরোচক রান্নাবান্নার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছি। কলেজ ছাত্রী মিথিলা আক্তার জানায়, কলেজ বন্ধ হলেও অনলাইনে ক্লাস চালু। টানা দুই সপ্তাহের ওপরে ঘরে বসে ক্লাস ব্রোয়িং লাগে। তাই গান শুনে আর ইনডোরে খেলাধূলা করে সময় ক্ষেপণ করি।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *