ভারতের আসাম প্রদেশের তিনসুকিয়া জেলার বাঘজানে অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডের (ওআইএল) প্রাকৃতিক গ্যাসকূপে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আগুন নেভাতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন দুই দমকল কর্মী।
গতকাল মঙ্গলবার (৯ জুন) আগুন লাগার খবর পেয়ে ছুটে গিয়েছিলেন তারা। বুধবার সকালে এ দুই কর্মীর মরদেহ উদ্ধার করেছেন জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) সদস্যরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দুই সপ্তাহ ধরেই গ্যাস বের হচ্ছিল কূপটি থেকে। মঙ্গলবার সেখানে হঠাৎ আগুন লেগে যায়। আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় দমকল বাহিনী। তাদের মধ্য থেকে হঠাৎ নিখোঁজ হন দুই কর্মী। বুধবার সকালে একটি জলাশয়ের পাশ থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
অয়েল ইন্ডিয়ার মুখপাত্র সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, দুই দমকল কর্মীর দেহ ঘটনাস্থলের কাছে থাকা একটি জলাভূমি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে যা বোঝা যাচ্ছে তাতে আগুনে পুড়ে নয়, পানিতে ডুবেই মৃত্যু হয়েছে তাদের। কেননা ওই কর্মীদের দেহে আগুনে পুড়ে যাওয়ার কোনো চিহ্ন নেই। তবে কী কারণে তারা মারা গেলেন তা জানার জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলের আশেপাশে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে আগুনের প্রভাব পড়েছে, পাশাপাশি গ্যাসকূপটি থেকে ক্রমাগত দাহ্য গ্যাস বের হওয়ায় এখনো সেই আগুন জ্বলছে, নেভানো সম্ভব হয়নি।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, দুই সপ্তাহ ধরেই গ্যাস বের হচ্ছিল কূপটি থেকে। মঙ্গলবার সেখানে হঠাৎ আগুন লেগে যায়। দমকলকর্মীদের পাশাপাশি ভারতীয় বিমানবাহিনীর কর্মীরাও আগুন নেভানোর কাজ করছেন। এছাড়াও আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী এবং এনডিআরএফের কর্মীরাও কাজ করছে। এলাকার মানুষদের উদ্ধার ও ত্রাণ কাজে সহায়তা করছেন তারা। আর আধাসামরিক বাহিনী গোটা অঞ্চলটিকে ঘিরে রেখেছে। গ্যাসকূপের আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তার জন্য সিঙ্গাপুর থেকে তিন সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল ভারতে পৌঁছে কাজ শুরু করেছে।
দমকলকর্মীদের পাশাপাশি ভারতীয় বিমানবাহিনীর সদস্যরাও আগুন নেভানোর কাজ করছেন। আসাম সরকারের অনুরোধে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও এনডিআরএফ। আধা-সামরিক বাহিনী দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে গোটা এলাকা।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আগুনের লেলিহান শিখা ৩০ কিলোমিটার দূর থেকেও দেখা যাচ্ছিল। এ কারণে আশপাশের এলাকার মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আগুনে পুড়ে গেছে কূপের আশপাশের অসংখ্য গাছপালা, বাড়িঘর, জমির ফসল।