‘বিনা অপরাধে আমাকে চার মাস জেল খাটতে হলো


নাম ও ঠিকানায় মিল থাকায় অপরাধ না করেও চার মাস সাজা খেটে মো. আবদুস সালাম ঢালী (৫৮) নামের এক ব্যক্তি মুক্তি পেয়েছেন। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় বাগেরহাট জেলা কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান।

এর আগে বিকেলে বাগেরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩-এর বিচারক তন্ময় গাইন ভার্চ্যুয়াল শুনানিতে নিরপরাধ সালাম ঢালীকে মুক্তির আদেশ দেন। একই সঙ্গে বিচারক খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সঞ্জিত কুমার মণ্ডলকে নিয়মিত আদালত চালু হওয়ার সাত কার্যদিবসের মধ্যে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কেন মো. আবদুস সালাম ঢালীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তার কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন।

খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, ২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটের মোংলা থানায় ইলেকট্রনিকস সামগ্রী চুরির একটি মামলায় ২০০৯ সালের ৩০ জুলাই আবদুস সালাম নামের এক আসামির দুই বছরের সাজা হয়। পলাতক ওই আসামির বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে গত ১১ মার্চ ওই আসামির নিজের নাম ও ঠিকানায় মিল থাকায় ভুল করে খুলনা নগরীর শেখপাড়া এলাকার মফিজ উদ্দিন ঢালীর ছেলে মো. আবদুস সালাম ঢালীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রকৃত আসামি হলেন খুলনার শেখপাড়া মেইন রোডের প্রয়াত শফিজ উদ্দিনের ছেলে মো. আবদুস সালাম।

ওসি আরও জানান, গত বৃহস্পতিবার সোনাডাঙ্গা থানার এসআই সঞ্জিত কুমার মণ্ডল বাগেরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভুল করে নিরপরাধ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পাশাপাশি তিনি নিরপরাধ সালামকে মুক্তিদান ও প্রকৃত অপরাধী সালামকে গ্রেপ্তার করতে পুনরায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার জন্য আদালতে কাছে আবেদন করেন। প্রায় ৪ মাস ধরে সালাম ঢালী বাগেরহাট জেলা কারাগারে আটক ছিলেন। আদালত ভার্চ্যুয়াল শুনানি করে সোমবার তাঁকে মুক্তির আদেশ দেন এবং পুলিশ কর্মকর্তা এসআই সঞ্জিত কুমার মণ্ডলকে নিয়মিত আদালত চালু হওয়ার ৭ কার্যদিবসের মধ্যে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কেন মো. আবদুস সালাম ঢালীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তার কারণ দর্শানোর আদেশ দেন।

বাগেরহাট কারাগারের জেলার এস এম মহিউদ্দিন হায়দার বলেন, ‘প্রায় চার মাস কারাগারে আটক থাকা আবদুস সালাম ঢালীর মুক্তির আদালতের আদেশের কপি হাতে পেয়েছি। সোমবার সন্ধ্যায় সাড়ে ছয়টায় তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।’

মুক্তি পেয়ে আবদুস সালাম ঢালী বাগেরহাট কারাফটকে সাংবাদিকদের বলেন, ‘নাম-ঠিকানায় মিল থাকায় পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করে। আমি নিরপরাধ। আমি পেশায় একজন মুদি দোকানি। বিনা অপরাধে আমাকে চার মাস জেল খাটতে হলো। আমাকে সামাজিকভাবে হেয় যারা করল, তাদের আমি বিচার চাই এবং আমি সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।’


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *