হজ নিবন্ধনের টাকা রিফান্ডের আবেদন ১৯ জুলাই থেকে


করোনা পরিস্থিতিতে সৌদি আরবের সিদ্ধান্ত এ বছর বাংলাদেশ থেকে কেউ হজে যেতে পারছেন না। ফলে নিবন্ধিত হজযাত্রীরা চাইলে তাদের জমা দেয়া টাকা রিফান্ডের সুযোগ পাবেন বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এজন্য আগামী ১৯ জুলাই থেকে অনলাইনে আবেদন করা যাবে। এর আগে ১৩ জুলাই থেকে এ আবেদনের কথা বলা হলেও কারিগরি প্রস্তুতি সম্পন্ন না হওয়ায় তা পেছানো হয়েছে।

এদিকে হজ অফিসের আইটি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, হজযাত্রীদের নিবন্ধন রিফান্ড বিষয়ে  বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। এদিন অনলাইনে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: নূরুল ইসলাম। বুধবার পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে মন্ত্রণালয় ও হজ অফিস ইউজার, নিবন্ধনকারী ব্যাংকের ফোকাল কর্মকর্তা, সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধনকারী কেন্দ্রের ইউজার ও নিবন্ধনকারী হজ এজেন্সির প্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণ দেবে হজ অফিসের আইটি বিভাগ।

রবিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৩ জুলাই নয়, ১৯ জুলাই থেকে অনলাইনে টাকা ফেরত নেয়ার আবেদন করা যাবে। এজন্য হজবিষয়ক পোর্টাল অথবা নির্ধারিত লিংকে হজযাত্রী নিজে অথবা নিবন্ধনকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিবন্ধন বাতিলের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদন গৃহীত হলে তার অনুকূলে নিবন্ধন বাতিল ভাউচার তৈরি হবে এবং ২০২০ সালের নিবন্ধন বাতিল হবে। ভবিষ্যতে হজে যেতে হলে তাকে নতুন করে প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন বাতিলকারী ব্যক্তিকে কোনো রকমের কর্তন ছাড়াই প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধনের টাকা ফেরত দেয়া হবে।

সরকারি ব্যবস্থাপনার হজ নিবন্ধন বাতিলকারী ব্যক্তির ক্ষেত্রে সোনালী ব্যাংক থেকে প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধনের জন্য জমাকৃত সব টাকা অনলাইনে সরকারি হজযাত্রীর একাউন্টে স্থানান্তর করা হবে। কোন হজযাত্রীর ব্যাংক হিসাব না থাকলে তার ইচ্ছা অনুযায়ী পে-অর্ডারের পরিশোধ করা হবে। এজন্য তাকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে নিবন্ধন বাতিল ভাউচার ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে।

বেসরকারি হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে নিবন্ধনের জন্য জমা দেয়া সব টাকা হজযাত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী সরাসরি নিবন্ধনকারী ব্যাংক থেকে অনলাইনে হজযাত্রীর একাউন্টে স্থানান্তর অথবা এজেন্সির মাধ্যমে প্রদান করা হবে। এক্ষেত্রে প্রাক-নিবন্ধনের জন্য জমাকৃত টাকা আগের ন্যায় পরিচালক, হজ অফিস ঢাকা থেকে হজযাত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী সরাসরি তাকে অথবা এজেন্সির মাধ্যমে ফেরত প্রদান করা হবে।

অন্যদিকে যেসব হজযাত্রী রিফান্ড করবেন না তাদের জমা দেয়া টাকা কোন অবস্থাতেই এ পর্যায়ে হজ কার্যক্রম বাবদ বাংলাদেশে ব্যয় করা যাবে না এবং সৌদি আরবেও প্রেরণ করা যাবে না। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ব্যতীত কোন এজেন্সি ব্যাংক থেকে এ টাকা উত্তোলন করতেও পারবে না। এ বছর নিবন্ধনকারীদের জমা দেয়া টাকা আগামী বছর হজ প্যাকেজ মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।

উল্লেখ্য, জমা দেয়া টাকা ফেরত নিলে নিবন্ধন বাতিল এবং আগামী বছরও হজে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ার আশঙ্কায় এ সুযোগ নিতে আগ্রহীর সংখ্যা খুব কম হবে বলে আভাস দিয়েছেন এজেন্সি মালিকরা।
সূত্রমতে, এ বছর বাংলাদেশের জন্য হজের কোটা ছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জন। এর মধ্যে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে চলা নিবন্ধন কার্যক্রমে ৬৪ হাজার ৫৯৯ জন নিবন্ধন করে, যার সরকারি ব্যবস্থাপনার ৩ হাজার ৪৫৭ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ৬১ হাজার ১৪২ জন।

সৌদি আরবে অবস্থানরত ১০ হাজার মুসলিম এ বছর হজ পালন করার সুযোগ পাবেন। তাদের মধ্যে ৭০ ভাগ বিদেশী এবং ৩০ ভাগ সৌদি নাগরিক। এরইমধ্যে সেখানে বিদেশী নাগরিকদের নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। চাঁদ দেখাসাপেক্ষে আগামী ৯ জিলহজ ৩০ জুলাই পবিত্র হজ পালিত হবে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *