সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানের কন্যা ঐশী খানের করোনা টেস্টের ভুল রিপোর্টেই শেষ হয়নি রিপোর্ট কাণ্ডের তেলেসমাতি। এবার ওই একই দিনে আরো কয়েকজনের ‘পজিটিভ’ রিপোর্ট আসা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী বিদেশগামী আরো কয়েকজন যাত্রী। তাঁদের মধ্যে ‘পজিটিভ’ হওয়া কেউ কেউ ঐশীর ঘটনা জানার পর নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে অন্য হাসপাতালে পরীক্ষা করিয়ে পেয়েছেন ‘নেগেটিভ’ রেজাল্ট। ফলে আবারও বিতর্কের মুখে পড়ল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। যদিও ওই দিনের ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি আজ-কালের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘ইতিমধ্যে সবাই জানেন, ঐশী খানের রিপোর্টে কারিগরি ভুলের কারণে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের (এনআইএলএমআরসি) পরিচালক গত সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে ভুল স্বীকার করেছেন। তার পরও আমরা বিষয়টি অধিকতর তদন্তের জন্য কমিটি করে দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন দিলে সে অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক যাত্রী জানান, গত ২৪ জুলাই তাঁরা নমুনা দেন এবং ২৫ জুলাই রাতে ‘পজিটিভ’ রিপোর্ট পান। বিষয়টি সন্দেহ হলে তাঁরা রাজধানীর বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে নতুন করে নমুনা পরীক্ষা করান। সেখানে তাঁদের রেজাল্ট এসেছে ‘নেগেটিভ’। ফলে তাঁরা পুরো বিষয়টির সুরাহা চান। গত ২৪ জুলাই যাঁদের নমুনা পরীক্ষার রেজাল্ট ‘পজিটিভ’ এসেছিল, বিশেষ ব্যবস্থায় সরকারি তত্ত্বাবধানে তাঁদের ফের পরীক্ষার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
নাম প্রকাশ না করে যাত্রীদের একজন বলেন, ‘যদি ওই দিন সবাই ভুল রিপোর্টের শিকার হন, তাহলে এর দায় সরকারকেই নিতে হবে। কারণ তাঁদের অনেকের জরুরি কাজ ছিল বিদেশে। এ ছাড়া তাঁরা আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।’
বিদেশগামীদের করোনা টেস্টের জন্য সরকার নির্ধারিত মোট ১৬টি সেন্টারের মধ্যে ঢাকার বাইরেও নানা ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থান থেকে আসছে বিদেশগামীদের হয়রানির নানা তথ্য। এর মধ্যে জামালপুরের সেন্টারটি গতকাল মঙ্গলবার ছিল বন্ধ। সরকার গত ২৩ জুলাই থেকে বিমানে বিদেশ গমনকারীদের জন্য করোনা (নেগেটিভ) পরীক্ষার সনদ বাধ্যতামূলক করেছে। বিমানযাত্রার ৭২ ঘণ্টা আগে কোনো নমুনা জমা নেওয়া হবে না এবং ২৪ ঘণ্টা আগে রিপোর্ট ডেলিভারির ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু এই নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটায় অনেক যাত্রী চরম হয়রানি ও ক্ষতির মুখে পড়ছেন।