লিবিয়া উপকূলে নৌকাডুবি, বাংলাদেশিসহ উদ্ধার ২২


লিবিয়ার উপকূলে অভিবাসী বহনকারী নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটেছে৷ বাংলাদেশিসহ ২২ জনকে উদ্ধার করা হলেও ১৬ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইওএম) শুক্রবার এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, ভূমধ্যসাগরে বৃহস্পতিবার রাতে ওই নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।

আইওএম জানিয়েছে, নিখোঁজ ব্যক্তিরা কে কোন দেশের নাগরিক, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে উদ্ধার হওয়া অভিবাসীরা মিশর, বাংলাদেশ, সিরিয়া, সোমালিয়া এবং ঘানার নাগরিক৷ তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন স্থানীয় জেলেরা৷ এদের মধ্যে সিরিয়ার একজন পুরুষ ও একজন নারী রয়েছেন৷

লিবিয়ার কোস্ট গার্ড তাদের সদস্যদের উদ্ধার কাজের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছে৷ এই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা তাদের৷ বার্তা সংস্থা এপিকে বাহিনীর কমোডোর মাসুদ আব্দাল সামাদ বলেন, এই পথটি দিয়ে অসংখ্য নৌকা যাচ্ছে৷ তবে শরতে সমুদ্র পাড়ি দেয়া বিপদজনক৷ বাতাসের কারণে যেকোন সময়ে নৌকাডুবি ও প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে৷

সাম্প্রতিক সময়ে অভিবাসীদের মধ্যে লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পড়ি দিয়ে ইউরোপে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে৷ মানব পাচারকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ ছোট রাবারের নৌকায় তুলে সমুদ্রে ছেড়ে দিচ্ছেন এসব অভিবাস প্রত্যাশীদের৷ আইওএম এর তথ্য অনুযায়ী, এভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন৷

এদিকে শুক্রবারের নৌকা ডুবির র্ঘটনায় উদ্ধারকৃতদের ত্রিপলি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ সেখানে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইওএম এর মুখপাত্র সাফা মিসাহলি৷ বর্তমানে তারা ত্রিপলি ভিত্তিক সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্লিটেন বন্দিশিবিরে রয়েছেন৷

সাম্প্রতিক সময়ে এই ধরনের শিবিরগুলোতে নির্যাতন, মুক্তিপণ আদায় ও নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে৷ বৃহস্পতিবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আধা সামরিক বাহিনী দ্বারা পরিচালিত বন্দিশিবিরগুলোতে কয়েক হাজার অভিবাসী জোরপূর্বক গুমের শিকার হয়েছেন৷

গত মে মাসে লিবিয়ার মানব পাচারকারী এক ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা গুলি করে ৩০ অভিবাসীকে হত্যা করেন৷ যার মধ্যে ২৬ জন ছিলেন বাংলাদেশি৷ ২৫ জুন ৬৭ জন অভিবাসন প্রত্যাশীকে ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার করে ইউরোপীয় মানবাধিকার সংস্থা ‘এসওএস মেডিটেরানে’র জাহাজ ওশান ভাইকিং৷ কাঠের নৌকায় করে তারা লিবিয়া থেকে ইটালিতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন৷ তাদের মধ্যে বাংলাদেশি ছাড়াও সুদানি, পাকিস্তানি, মরোক্কান ও মিশরীয় নাগরিক ছিলেন৷


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *