হ্যামট্রামিক শহরে পরিচ্ছন্ন রাজনীতির পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রাখব: মুহিত মাহমুদ


আগামী ৩ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের বাংলা টাউনখ্যাত হ্যামট্রামিক সিটির নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বাংলাদেশি আমেরিকান মুহিত মাহমুদ।

তিনি হ্যামট্রামিক​ শহরের সার্বিক উন্নয়নে বাংলাদেশি কমিউনিটি এবং কমিউনিটির বাইরে যারা আছে সকলের সহযোগিতা নিয়ে কাজ করবেন । বাংলা সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক ও টিভি সেভেন বাংলার পরিচালক ইকবাল ফেরদৌসকে তিনি এসব কথা ব্যক্ত করেন।

মুহিত মাহমুদ বলেন ‘হ্যামট্রামেক একটি ছোট শহর এবং এখানে এক জায়গায় অনেক মানুষ বাস করে। তাদের বিভিন্ন নাগরিক সুবিধার জন্য কাজ করবো । আপনাদের সকলের দোয়ায় ইতিমধ্যে কমিউনিটির জন্য অনেক কাজ করেছি এবং এই কার্যক্রমকে আরো সম্প্রসারিত করতে আপনাদের সকলের সহযোগিতা চাই । এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশি আমেরিকানদের রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলাম । বাংলাদেশ আমেরিকান ডেমোক্রেটিক ককাস (বিএডিসি) এর​ সভাপতি হিসেবে কাজ করছি । তাছাড়া স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে লেবার ইউনিয়ন এর হয়ে কাজ করছি এবং তাদেরকে কিভাবে বড় বড় কোম্পানির কাছ থেকে নিজেদের অধিকার আদায় করে নিতে হয় সে সম্পর্কে সহযোগিতা করছি ।’

বর্তমানে প্রচলিত ট্যাক্স রিটার্ন ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন করার জন্য কি ধরনের পদক্ষেপ নেবেন এমন প্রশ্নের উত্তরে মুহিত মাহমুদ বলেন ‘কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হলে ট্যাক্স রিটার্ন ব্যবস্থাকে মডার্ন টেকনোলজির মাধ্যমে করার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিব । জনগণের সেবা করার জন্যই রাজনীতিতে নেমেছি এবং সে জন্য যা করণীয় নির্বাচিত হওয়ার পর তাই করব ।’

আরও দুইজন বাংলাদেশি আমেরিকান কাউন্সিলর পদের জন্য দাঁড়িয়েছেন এজন্য নির্বাচন ক্যাম্পেইনে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা অনুভব করছেন কিনা অথবা তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা পাচ্ছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি স্পষ্ট যে আমাদের সকলের রাজনীতি কমিউনিটির উন্নয়নের জন্য । আমরা আমাদের কমিউনিটিতে যে সকল নেতৃবৃন্দ আছি তারা সকলে একসাথে বসে কিভাবে আমরা একটা পরিচ্ছন্ন নির্বাচন করতে পারি সে বিষয়ে আলোচনা করেছি । তারপরও কিছু কিছু ইরেগুলারিটি সম্পর্কে শোনা যাচ্ছে । সকলকে অনুরোধ করব আমরা এ সকল বিষয়াদি থেকে বের হয়ে একটা পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টিতে সহযোগিতা করুন । যেটা আমাদের কমিউনিটির জন্য ভালো হবে এবং পরবর্তী প্রজন্ম রাজনীতিতে আসতে উৎসাহিত হবে ।’

অতীতে অনেকেই ভোট কারচুপি করে জয়ী হয়েছে এমন অভিযোগ আছে । এই বিষয়ে অভিমত জানতে চাইলে মুহিত মাহমুদ বলেন, ‘আমেরিকা পৃথিবীর সবথেকে প্রশিদ্ধ গণতান্ত্রিক দেশ এবং এখানে খুব বেশি গণতন্ত্রের চর্চা হয় । অবশ্যই জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হবে । আমরা আমাদের কর্ম পরিকল্পনা জনগণের কাছে উপস্থাপন করব । জনগণের যাকে পছন্দ হবে তাকে নির্বাচিত করবে । অতীতে যারা ভোট কারচুপির মাধ্যমে জয়যুক্ত হয়েছে সেটা অবশ্যই ভাল কাজ নয় । আশা করবো এই ধরনের চর্চা আর কখনোই হবে না এবং সকলকে অনুরোধ করব এই ধরনের চর্চা থেকে আমরা যেন বেরিয়ে আসি । যিনি নির্বাচিত হবেন তিনি শুধু বাঙালি কমিউনিটির জন্যই কাজ করবেন তা নয় । সকলের জন্যই তিনি কাজ করবেন ।’

আমেরিকান রাজনীতিতে আসার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে মুহিত বলেন, ‘আমাদের কমিউনিটিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে । যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্কের পরই মিশিগান রাজ্যে প্রায় ৭০ হাজার বাংলাদেশির বসবাস করছে এবং আমরা যারা এখানে আছি তারা এখন দ্বিতীয় প্রজন্মের যাচ্ছি । এখন নতুন প্রজন্মকে তাদের আমেরিকান সুযোগ সুবিধাগুলো দেখিয়ে দিতে হবে । সেই জন্য রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, ডাক্তার, এবং ইঞ্জিনিয়ার দরকার । আমি ছোটকাল থেকেই মানুষের জন্য কাজ করে এসেছি । সেটা আমার পারিবারিক শিক্ষা দিয়েছে । সেখান থেকে আমি পরিবারের সাথে আলাপ-আলোচনা করে এবং সকলের সহযোগিতা নিয়ে আমেরিকার রাজনীতিতে এসেছি । সকলের সহযোগিতায় নির্বাচিত হলে কমিউনিটিকে আরও সামনের দিকে নিয়ে যেতে পারবো এই আশা ব্যক্ত করছি ।’

আপনি কেন মনে করেন যে ভোটাররা আপনাকে ভোট দেবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি আমার শিক্ষা, রাজনৈতিক ও কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্র তৈরি করতে কাজ করব। তাছাড়া সকলের সহযোগিতা নিয়ে হ্যামট্রামিক​ শহরকেপরিচ্ছন্ন রাজনীতির পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রাখব এবং একটি পরিচ্ছন্ন, পরিবেশ বান্ধব, নিরাপদ বসবাসের স্থান হিসেবে গঠনে ভূমিকা রাখব।’

আপনার বাসস্থান সম্পর্কে অনেকের মধ্যে একটা কথা প্রচলিত আছে যে, আপনি হ্যামট্রামিক শহরের বাইরে বসবাস করেন। এই শহরে বাংলাদেশি কমিউনিটি বেশি থাকায় নির্বাচনে জয় লাভ নিশ্চিত হবে মনে করে এখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। এই প্রশ্নের জবাবে মুহিত মাহমুদ বলেন, ‘হ্যামট্রামিক শহরে আমার বাড়ি আছে যেখানে আমি এক বছর ধরে বসবাস করছি। তবে হ্যাঁ ট্রয় সিটিতে আমার একটি বাড়ি আছে। আপনারা জেনে থাকবেন যে আমেরিকার সংবিধান অনুযায়ী যদি কেউ অন্তত মাসে দুইবার কোন স্থানে নিজের বাড়িতে বসবাস করে তাহলে ওই এলাকায়​ সংশ্লিষ্ট নির্বাচনে তিনি অংশগ্রহণ করতে পারবেন।’

নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে সকলকে ভোট দেয়ার জন্য অনুরোধ করে, মুহিত মাহমুদ বলেন ‘বাংলাদেশ কমিউনিটির সার্বিক উন্নয়নের জন্যই আমার রাজনীতিতে আসা । আপনাদের সহযোগিতা পেলে আমি আপনাদের আরো সেবা দিতে পারব। ভোট প্রদান করে আমাকে নির্বাচিত করুন ।’


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *