আলোকচিত্রী হাবিবা নওরোজের ‘টাং-টাইড’ শীর্ষক একক প্রদর্শনী শুরু 


আলিয়াঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার লা গ্যালারিতে শুরু হলো  আলোকচিত্রী হাবিবা নওরোজের ‘‘টাং-টাইড ‘ শীর্ষক একক প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয় শুক্রবার, ২৫ ফ্রব্রেুয়ারি।

আলিয়াঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফরাসি দূতাবাসের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স জিল গাহাসোঁ।

নানান পদের  দেশীয় খাবারের যে সৌন্দর্য এবং কখনো কখনো অদ্ভুদ  চেহারা আছে সেই দিকটা নিয়ে আলোকচিত্রি হাবিবা  নওরোজের  কাজ করার আগ্রহ ছিল বেশ আগে থেকেই। নওরোজ  যে ধরনের খাবার দিয়ে এই ভাস্কর্যগুলো   বানান  সেই খাবারগুলো আমরা সবাই কম বেশি খেতে ভালোবাসি কিন্তু লোকের সামনে গর্ব করে বলতে স্বস্তি বোধ করিনা । এর বড় কারন হয়তো এই যে এগুলো কখনো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের “কুল””ইনোভেটিভ” খাবার প্রচারের আওতায় আসেনা। এগুলো আন্তর্জাতিক  ফাস্ট ফুড প্রতিষ্ঠানের  আগ্রহের কারন কখনো হয়নি। হয়তো তাই আমরাও এই  দেশীয় খাবারগুলো  খাওয়া অনুসরনীয় জীবন যাপনের পুর্বশর্ত মনে করিনা । নিওলিবারাল  ইকোনমি যেভাবে  দেশে দেশে  সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চালায়  এবং দেশীয় সংস্কৃতির  অবমূল্যায়ন করে তার প্রভাব এই  দেশীয় খাবারের সংস্কৃতির  উপর পরে । এই খাবারগুলোকে যদি নতুন আলোকে দেখাতে চাই তাহলে তার চেহারাটা কেমন হবে? দ্বিতীয় লক ডাউনের সময় নওরোজ তার ষ্টুডিওতে  এই খাবারগুলোর জড়ো করে  ডুবে যান “ভাস্কর্জ” বানানোর কাজে।  কখনো সেগুলো রূপ নেয় অলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন বস্তুর, আবার  কখনো ১৯০০ শতকের কোন  ল্যাবে তৈরী  অদ্ভুত  কোন যন্ত্র। নওরোজের  কল্পনার মঞ্চে তারা রূপকথার রাক্ষসের প্রান ভোমরা লুকিয়ে রাখা  ডালিম,  অলৌকিক দিঘীতে সাঁতরানো মাছ আবার কখনো কপোত কপোতীর রূপে হাজির হয়।

হাবিবা নওরোজ একজন আলোকচিত্রী। লৈঙ্গিক রাজনীতি, আত্ন পরিচয় এবং পুরাণ তার মূল আগ্রহের বিষয়।  নওরোজ ২০১৪ সাল থেকে স্টুডিও ভিত্তিক ছবি দিয়ে গল্প বলে আসছেন। নওরোজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ওমেন  এ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ’ বিভাগ থেকে ২০১২ সালে তার স্নাতকোত্তর শেষ করেন। পরে, ২০১৪ সালে তিনি সাউথ  এশিয়ান মিডিয়া ইন্সটিটিউট, পাঠশালা থেকে আলোকচিত্রের প্রশিক্ষণ শেষ করেন। এই প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে  তিনি ড্যানিশ স্কুল অফ মিডিয়া  এ্যান্ড জার্নালিজমে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। বর্তমানে তিনি সাউথ  এশিয়ান মিডিয়া ইন্সটিটিউট, পাঠশালায় ভিস্যুয়াল এন্থ্রোপোলোজির ওপর শিক্ষকতা করছেন। তার শিল্পকর্ম ‘কনসিলড’ ২০১৮ সলে ইনভিসিবল ফটোগ্রাফার্স এশিয়া আর্ট এ্যাওয়ার্ডস, এবং সামদানি আর্ট এ্যাওয়ার্ড ২০২০এ  ফাইনালিস্ট হিসেবে নির্বাচিত হন। দেশবিদেশের বিভিন্ন প্লাটফর্মে তার শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হয়ে আসছে। বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস, ভাইস এশিয়া, ভয়েস অফ আমেরিকা, দ্য হিন্দু, ভোগ ইন্ডিয়া সহ অন্যান্য প্রকাশনায় তার কাজ জায়গা করে নিয়েছে।

প্রদর্শনীটি চলবে ১০ র্মাচ ২০২২ পর্যন্ত। সোমবার থেকে শনিবার বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রদর্শনীটি খোলা  থাকবে। রোববার সাপ্তাহিক বন্ধ। প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *