অনলাইনে সংগৃহীত অর্থ ক্রাইস্টচার্চে নিহতদের দিতে চায় সেই ডিম বয়


 আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::  অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ফ্রেজার অ্যানিংয়ের মুসলিমবিদ্বেষী মন্তব্যের জেরে তার মাথায় ডিম ভেঙে বিশ্বজুড়ে হিরো বনে গেছেন দেশটির ১৭ বছর বয়সী কিশোর উইল কনোলি। ইতোমধ্যে অনানুষ্ঠানিকভাবে তাকে অস্ট্রেলিয়ার পারসন অব দ্য ইয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারকারীরা বলছেন, এই হিরোই আমাদের দরকার।

১৭ বছরের কিশোরের এই সাহসিকতাপূর্ণ কাজে উৎসাহ দিতে ও আইনি লড়াইয়ের ব্যয় বহনে অনলাইনে তহবিল গঠনে একটি পেজ চালু করেছিল গো-ফান্ডমি।

গো-ফান্ডমি পেজে ‘মানি ফর এগ বয়’ শিরোনামে তহবিল গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়। মাত্র দুই হাজার ডলার সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে একদিন আগে এই ইভেন্ট চালু করা হলেও বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষ এগিয়ে আসায় ইতোমধ্যে ৪২ হাজার ডলার জমা পড়েছে। ২ হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষ ডিমবয়কে অর্থ সহায়তা করেছে।

অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর অ্যানিং নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে গত শুক্রবারের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার দায় মুসলিম অভিবাসনের ওপর চাপিয়েছিলেন। তার এই মন্তব্যের পর বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।

পরদিন মেলবোর্নে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলার সময় অ্যানিংয়ের মাথায় ডিম ভেঙে তার মন্তব্যের প্রতিবাদ জানান হ্যাম্পটনের কিশোর উইল কনোলি। বিশ্বজুড়ে তার পরিচয় এখন ‘ডিম বয়’ হিসেবে। ডিম বয়ের প্রতিকৃতি টি-শার্টে ছাপিয়ে বিশ্বজুড়ে বিক্রি হচ্ছে। তার আইনি লড়াইয়ের তহবিল গঠনের জন্য পেজ চালু করে গো-ফান্ডমি।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংগীত শিল্পীরা ঘোষণা দিয়েছেন, তাদের কনসার্টে আজীবন বিনা টিকিটে প্রবেশ করতে পারবেন ডিম বয় উইল। তার খ্যাতি এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ছে যে, অনেকেই বলছেন, তাদের দেশে এলে ডিম বয়কে ভিআইপি সেবা দেয়া হবে।

হুয়িটআস নামের একটি ব্যান্ড দল ‘হিরো অব দ্য আর্থ’ ঘোষণা করেছে তাকে। কানাডা বলছে, ডিম বয় তাদের দেশে এলে তাকে বিনামূল্যে ড্রিঙ্কস করাবে। অনেকেই তাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তবে সিনেটরের মাথায় ডিম ভাঙার একটি ভিডিও টুইটারে আপলোড করার পর থেকে তার অ্যাকাউন্টে তেমন কোনো আপডেট পাওয়া যাচ্ছে না। তার সর্বশেষ পোস্টে ছিল ডিম ভাঙার অভিজ্ঞতার বর্ণনা। এতে উইলি বলেছেন, রাজনীতিকদের ডিম মারবেন না।

উইলির মায়ের সঙ্গে সোমবার কথা বলেছে অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম নিউজ ডটকম ডট অস্ট্রেলিয়া। তিনি ছেলের গালে সিনেটরের থাপ্পড়ের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

সোমবার গো-ফান্ডমি পেজের একজন ক্রিয়েটর বলেন, “আমি কিছুক্ষণ আগে ‘ডিম বয়’ উইলির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। তার জন্য গঠিত তহবিলের বেশির ভাগ অর্থ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে সন্ত্রাসী হামলায় হতাহতদের সহায়তায় পাঠাতে চান উইলি।”

অ্যানিংয়ের মাথায় ডিম দিয়ে আঘাত হানার পর এক টুইট বার্তায় উইলি বলেন, মুসলিমরা সন্ত্রাসী নয়, সন্ত্রাসীর কোনো ধর্ম নেই। মুসলিমদের যারা সন্ত্রাসী হিসেবে মনে করে তারা অ্যানিংয়ের মতো শূন্য মাথার মানুষ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *