হবিগঞ্জে উদ্ধারকৃত তিনটি গন্ধগোকুল সাতছড়িতে অবমুক্ত


হবিগঞ্জ শহরের শংকর বস্ত্রালয়ের সামনে থেকে উদ্ধার করা মা ও দুই বাচ্চাসহ ৩ গন্ধগোকুলকে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা হয়েছে।

রোববার (১৬ জুন) বিকেলে হবিগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাচ্ছিরুল ইসলাম বণ্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ফরেস্ট রেঞ্জার রেহান মাহমুদের হাতে গন্ধগোকুলগুলো হস্তান্তর করেন। পরে সন্ধ্যায় সেগুলো অবমুক্ত করে বন বিভাগ।

হস্তান্তরকালে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ফজলুর রহমান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেলসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অবমুক্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে বন কর্মকর্তা রেহান মাহমুদ বলেন, গন্ধগোকুল প্রকৃতির উপকারী প্রাণী। এদের বনে থাকাই উচিত। আমরা সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে মাসহ বাচ্চু দু’টিকে অবমুক্ত করেছি।

শুক্রবার (১৪ জুন) রাতে স্থানীয় লোকজন একটি গন্ধগোকুলের বাচ্চা পেয়ে এটিকে মেরে ফেলতে চান। পরে তানিম নামে এক যুবক গিয়ে তাদের হাত থেকে এটিকে বাঁচিয়ে বাসায় নিয়ে রাখেন। পরে শনিবার সকালে আরও একটি বাচ্চা পেয়ে দু’টিকে একসঙ্গে রাখেন তিনি। এরপর একই রাতে একই জায়গায় মা গন্ধগোকুলটি এসে ঘুরতে থাকে। পরে সেটিকেও বাসায় নিয়ে যান তিনি। শারীরিকভাবে দুর্বল হওয়ায় রাতে বিভিন্নভাবে সেবা যত্নসহ কলা এবং আম খাওয়ানো হয় এগুলোকে।

এ ব্যাপারে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক প্রাণিবিদ ড. মোহাম্মদ ফারুক মিয়া বলেন, এটি বাংলাদেশের একটি বিপন্ন প্রজাতির প্রাণি। আইইউসিএন এই প্রাণীটিকে বিপন্ন ঘোষণা করেছে। প্রাণীটি সাধারণত ইঁদুর এবং মৃত মুরগি খেয়ে আমাদের পরিবেশকে রক্ষা করে। এগুলো সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা)  সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, বন-জঙ্গল উজাড় হয়ে যাচ্ছে বিধায় খাবারের খোঁজে তারা লোকালয়ে চলে এসেছে। ফলে এখানেই বংশ বিস্তার করছে। আমাদের নিজেদের  জন্য এদের বাঁচিয়ে রাখা দরকার। প্রাকৃতিক পরিবেশে বেড়ে ওঠা এইসব প্রাণী বন ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসাটা ভাবনার বিষয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *