কমলগঞ্জে জ্বরের প্রকোপ


মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ঘরে ঘরে ভাইরাস জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। যবুক, বৃদ্ধ ও শিশু-কিশোররা আক্রান্ত হচ্ছেন জ্বরে। তবে বৃদ্ধ ও শিশুরাই বেশী আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানা যায়।  এ জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের শরীরের তাপমাত্রা (জ্বর) ১০১ থেকে ১০৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠা-নামা করে। ভাইরাস জ্বরের সাথে রয়েছে মাথাব্যথা ও সর্দি-কাশি। ঘরের একজন জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর ওই বাড়ীর সবাইকেই জ্বরের প্রকোপে পড়তে হচ্ছে।

ফলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও প্রাইভেট চেম্বারগুলোতে ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের চাপ অনেক বেড়েছে। তবে এ জ্বরের পেছনে মূল কারণ হিসেবে বিরূপ আবহাওয়াকেই চিহ্নিত করেছেন স্থানীয় চিকিৎসকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে দৈনিক গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ জন ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার দেখাতে আসা আমেনা বেগম জানান, ৭দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বিছানাবন্দি ছিলাম। আমার বড় ছেলেকে আজ হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। জ্বরের কারণে শরীর দুর্বল হয়ে পড়েছে। ঠিকমতো হাঁটাচলা করতে পারছি না। মাথায় খুব ব্যথা,সাথে সর্দি-কাশি আছে। এর সাথে গরমও বেশি।

ভানুগাছ বাজারে এক প্রাইভেট চেম্বারে নূরজাহান চা বাগান থেকে ডাক্তার দেখাতে আসা বৃদ্ধা রায়বান বেগম জানান, বয়সের ভারে কাবু হই গেছি। জীবনের এত বছর পার করি আইলাম কিন্তু এবারকুর মতো গরম কোন বছর পাইছিনা। ইজাত গরম আর সহ্য করতাম পাররাম না। গরম সহ্য করার বয়স আর আছে নিরে বাবাইন। ৩দিন ধরি জ্বর। কোন ঔষধেই শরীরের জ্বর কমাইত পারে না। জ্বরের কারণে শরীর একেবারে দুর্বল হইগেছে। খানির(খাওয়ার) রুচিও নাই।

আরেক রোগী বৃষ্টি আক্তার (১২) জানান, স্কুলে পরীক্ষা চলছে। জ্বরের কারণে সে পরীক্ষা দিতে পারেনি। ভাইরাস জ্বরে সে নেতিয়ে পড়েছে।

এদিকে কমলগঞ্জ উপজেলার ফার্মেসী গুলোতে মানসম্পন্ন কোম্পানির প্যারাসিটাল সিরাপ, ট্যাবলেট ও সাপোজিটারী সংকট দেখা দিয়েছে।

ভানুগাছ বাজারের নিরাময় ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী আব্দুর রাজ্জাক রাজা বলেন, মান সম্পন্ন কোম্পানির কাছে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট, সিরাপ ও সাপোজিটারীর চাহিদাপত্র দিলেও কোম্পানি থেকে সাপ্লাই নাই বলে জানান।

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মুন্না সিনহা জানান, এটা ভাইরাসজনিত জ্বর। এটা জ্বরে আক্রান্ত রোগীর হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ার কারণে প্রতিটি ঘরে ঘরে জ্বরের রোগী বেশী। এই ধরণের জ্বর সাধারণত ২-৩ দিন অতিবাহিত হয়। জ্বর হলে প্রথমত প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ সেবনের পরামর্শ দেন তিনি।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *