ক্রীড়া ডেস্ক :: বিজ্ঞানি মহলে অনেক কিছু নিয়েই তোলপাড় তৈরি হয়। বিশ্বের নানা রহস্য উন্মোচনে নিরন্তর প্রচেষ্টা থাকে বিজ্ঞানিদের। তাদের আবিস্কারই পৃথিবীকে এনে দাঁড় করিয়েছে আজকের প্রযুক্তির এই উৎকর্ষতার যুগে। যেখানে একজন মানুষের ভেতর থেকে তারই আদলে আরেকজন মানুষ পর্যন্ত জন্ম দিতে সক্ষম হচ্ছেন বিজ্ঞানিরা। যাকে বলে ক্লোনিং পদ্ধতি।
বলা হয়ে থাকে, বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন সুপার স্টার লিওনেল মেসি ভিনগ্রহের। কেউ কেউ তাকে এলিয়েন বলেও সম্বোধন করে থাকেন। জাদুকরি এই ফুটবলারের বিকল্প আর কখনও তৈরি হবে বলেও বিশ্বাস করেন তার ভক্তরা। কিন্তু বিজ্ঞানীরা জানিয়ে দিয়েছেন, ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে সম্ভব, আরেকজন মেসি তৈরি করা।
আধুনিক টেকনিক এবং টেকনোলজি ব্যবহার করে মেসির ক্লোন তৈরি করা সম্ভব বলে দাবি করেছেন বিখ্যাত জেনেটিক বিশেষজ্ঞ আরকাদি নাভারো। যিনি আবার ইউরোপিয়ান জেনোম আরকাইভের প্রধানও বটে।
চলতি মৌসুমে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে যাচ্ছেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। ৩০ বছর বয়স পার হয়ে যাওয়ার পরও মেসিকে দেখে যে কেউ বলবে, ২০ বছরের এক টগবগে তরুণ। বিশেষ করে এই সপ্তাহের শুরুতেই এস্টাডিও বেনিতো ভিয়ামারিনে বেটিসের বিপক্ষে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখানোর পর তো বিশ্বব্যাপি প্রশংসায় ভাসছেন বিশ্বসেরা এই ফুটবলার।
কিউ থি জুগেস নামক একটি পত্রিকার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কথা বলতে গিয়ে ইউরোপিয়ান জেনোম আর্কাইভের প্রধান নাভারো মেসির চেয়েও বেশি ম্যাজিক দেখিয়ে ফেললেন। তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই মেসির মত হুবহু আরেকজন খেলোয়াড় মেসিকে পেতে পারি। বর্তমানে যে টেকনিক ব্যবহার করা হয় সেটা ব্যবহার করে আমরা তার ক্লোন তৈরি করতে সক্ষম হবো। যেটা দেখতে মনে হবে যেন মেসির জমজ কোনো ভাই।’
জেনেটিং ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পরিচিত নাভারো বলেন, ‘ধরা যাক, আমরা দুই জোড়া মেসি তৈরি করে ফেলতে পারলাম। অর্থ্যাৎ মেসির ক্লোন তৈরি করতে গিয়ে একাধিক মেসির জন্ম দিলাম, তাহলে তাদের মধ্যে একজনকে আমরা টাইম চেম্বারে হিমায়িত করে রেখে দিতে পারবো।’
তাহলে কি হবে? এর জবাবও দিয়েছেন নাভারো। তিনি বলেন, ‘তাহলে অন্তত ২০ কিংবা ৩০ বছর পর আবারও আমরা আরেকজন মেসিকে পেতে পারবো। যেটাকে হিমায়িত করে রাখা হবে, তাকে তার সঠিক সময়ে পৃথিবীতে নিয়ে আসা সম্ভব হবে। যদি সব কিছুই পরিকল্পনা মতো সঠিকভাবে এগোয়, তাহলে সেই মেসিও হবে প্রকৃত মেসির মত একই।’
তবে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ার নাভারো এটাও জানিয়ে দিয়েছেন যে, বার্সা অধিনায়কের ক্লোনিং করার পরিকল্পনার অর্থ এই নয় যে, বিশ্বের অন্যতম সেরা এই ফুটবলারকে সারা বিশ্বের সামনে উন্মুক্ত করে দেয়া। তিনি বলেন, ‘জেনেটিক আমাদেরকে একটা সুযোগ দান করেছে শুধু। ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে যে ব্যক্তি তৈরি হবে, সে হতে পারে প্রকৃত মেসির মতই। কিন্তু দিন শেষে মেসি মেসিই।’
এই জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারের মতে, ‘তার (মেসি) ফুটবল কোয়ালিটির মধ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। খুবই স্পষ্ট যে, একটি হচ্ছে তার জেনেটিক্যাল বা মজ্জাগত। অন্যটি হচ্ছে তার শিক্ষাগত, অবস্থানগত এবং পরিবেশষগত।’
নাভারো বলেন, ‘অর্থ্যাৎ মেসি হচ্ছেন সেই মেসি। যার মধ্যে ফুটবলের বর্তমান বৈশিষ্ট্য শুধুমাত্র জেনিটিক্যালি আসেনি। তিনি হচ্ছেন, তার সময়কার পরিবেশের একটি প্রোডাক্ট। যিনি গড়ে উঠেছে লা মাসিয়ায় এবং হরমোনাল চিকিৎসা গ্রহণ করে উঠে এসেছেন।’
তাহলে মেসির ক্লোন তৈরি করে আরেক প্রকৃত মেসি কিভাবে সম্ভব? নাভারো বলেন, ‘জেনেটিক্সের বিদ্যা এখন অনেক কিছুই সহজবোধ্য করে দিয়েছে। সম্ভাবনা তৈরি করেছে শুধু। মেসির ক্ষেত্রে এটা প্রজোয্য হতে পারে। তবে, সে ক্ষেত্রে যে মেসি তৈরি হবে তিনি মেসির পূর্ণাঙ্গ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হতেও পারেন আবার নাও পারেন। অবস্থানগত বিষয় এবং আমাদের চারপাশে যা ঘটছে, তার ভিত্তিতে আমরা শুধু চেষ্টা করে দেখতে পারি।’